Read Time:6 Minute, 39 Second

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিলে ‘একতরফা’ নির্বাচনটি হবে ‘একদলীয় বাকশালী নির্বাচন’ বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে সরকারের পথ-রেখা অনুসারে চলবে তার প্রমাণ তারা(নির্বাচন কমিশন) নিজেরাই দিচ্ছে। সরকারের সাজানো প্রশাসনের কোন রদবদল করবে না বলে তারা জানিয়েছে। তাদের জন্য এটাই স্বাভাবিক।

সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিঙে দলের এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন কি করে গ্যারেন্টি দিতে পারে যে, এখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে যাদেরকে আওয়ামী সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে এটাই তো বাস্তব সত্য। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের রক্ত পরীক্ষা করে তাদেরকে কমিশনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সুতরাং এটি হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একদলীয় বাকশালী নির্বাচন। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অর্থই হলো নির্বাচনী আত্মহত্যা।

রিজভী বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে বাতিল করার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যে আপীল করা হয়েছিল রবিবার তা ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ করা হয়েছে। আপীলকারী দল রায়টিকে ‘ন্যায় ভ্রষ্ট’ বলে উল্লেখ করে তাদেরকে সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেছে।

সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদানের মাধ্যমে তাদের সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার দৃষ্টান্ত নতুন নয়। এই রায়ে বিস্মিত না হলেও সুবিচার লাভে শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগে যুক্ত ব্যক্তিগণের রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক বক্তব্য এবং ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করার ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়ছে দেশবাসী। যে রাজনৈতিক দলের বিস্তৃতি সারাদেশে দৃশ্যমান, জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকারের প্রায় সকল স্তরে প্রতিনিধিত্বশীল থাকার প্রমাণিত দৃষ্টান্তের অধিকারী। তবে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পাশাপাশি নাম গোত্রহীন অপরিচিত দলকে নিবন্ধন দেয়ার নির্দেশ দেয়ার দৃষ্টান্ত সুবিচারের প্রমাণ বহন করে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধীতা করা যেকোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সেই অধিকারের সুরক্ষা বিচার বিভাগের কাছেই প্রাপ্য।এর ব্যতিক্রম গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচারের পরিপন্থী এবং অগ্রহণযোগ্য।

দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব ঊন নবী খান সোহেল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ ১৪ জন নেতা এবং রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ ঊন নবী ডন, জেলা যুব দলের সহসভাপতি তারেক হাসান সোহাগ, মহানগর যুব দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জহির আলম নয়নকে ‘মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজা’ প্রদানের নিন্দা জানান রিজভী।

তিনি বলেন, এসব ফরমায়েসী রায় সুপরিকল্পিত। নির্বাচনের আগে মাঠ ফাঁকা করার জন্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের শুধু মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারই নয়, পুরনো মামলায় সাজা দেয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। সজীব তরুণ এসব নেতাদের যদি সাজা দিয়ে আটকিয়ে রাখা যায় তাহলে শেখ হাসিনার অবৈধ মসনদ টিকে থাকবে বহুদিন এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব নেতৃবৃন্দকে সাজা দেয়া হয়েছে। এদের পরিবার এদের পরিজন অসহায় কে তাদের পরিবারকে দেখবে?

কারাগারে বিরোধী দলের সাবেক সাংসদ দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও সাবেক সাংসদ জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকনকে কারাগারে ডিভিশন না দেয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, সংসদ সদস্য ছিলেন তাদেরকে ডিভিশন হয় না। কিন্তু আমি জানি, আমাদেরকে তো প্রায়ই এ সরকারের আমলে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ডিভিশন দেয়া হয়েছে.. শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের কানেকশনের কারণে।

আর দেশের সুপরিচিত রাজনীতিবিদ ও এমপিদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদেরকে ডিভিশন দেয়া হয়নি, তাদেরকে অমানবিক পরিবেশে মেঝেতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। এই শীতে মেঝের ঠাণ্ডায় তারা চরম শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছেন। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কারাকর্তৃপক্ষ এখনো তাদেরকে ডিভিশন দিচ্ছে না।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post এএনআইয়ের প্রতিবেদন : পিটার হাসকে হুমকির খবর অস্বীকার করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
Next post কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে : প্রধানমন্ত্রী
Close