Read Time:5 Minute, 33 Second

গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক ও মারাত্মক সামরিক অভিযান এবং এর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো সমর্থনের কারণে দেশটির বিরুদ্ধে আরব বিশ্বের ক্ষোভ বাড়ছে বলে বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন মার্কিন কূটনীকিতরা। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এ বিষয়ে এক কূটনীতিক তারবার্তা পেয়েছে সিএনএন। বার্তায় বলা ছিল, ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞকে সমর্থন করার জন্য আরব বিশ্বের এক প্রজন্মের কাছে সমর্থন হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের কারণে মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

বুধবার ওমানের মার্কিন দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত কূটনীতিক তার বার্তার কথাপকথনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে বাজেভাবে হেরে যাচ্ছি।’ সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো সমর্থন দেখা যাচ্ছে। তারা বিষয়টিকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ এবং নৈতিক অপরাধ হিসেবে দেখছে।

দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত এই কূটনীতিক বার্তাটি মাস্কটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মার্কিন কর্মকর্তা লিখেছিলেন এবং অন্যদের মধ্যে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ, সিআইএ এবং এফবিআই-এর কাছে বার্তাটি পাঠানো হয়েছিল। তবে শুধু মধ্যপ্রাচ্যের একটি অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত এই বার্তাকে পুরো অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান মার্কিন বিরোধী মনোভাবের জাগরণ বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।

অপরদিকে কায়রোতে মার্কিন দূতাবাস থেকে সিএনএনের কাছে আসা আরেকটি বার্তা মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি মন্তব্য উল্লেখ করে ওয়াশিংটনে পাঠানো হয়েছে। মিসরীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্যটি ছিল, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নিষ্ঠুরতা এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি অবজ্ঞা পূর্ববর্তী সমস্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টদের বর্বরতাকে ছাড়িয়ে গেছে।’ এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সিএনএন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দ্বারস্থ হয়েছে।

গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ ও এই অঞ্চলে ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের জন্য রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছেন। প্রশাসন যখন যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে প্রতিহত করেছে, তখন কর্মকর্তারা গাজায় ত্রাণ সহায়তা বাড়ানোর জন্য কাজ করেছেন এবং ছিটমহলে আরও সহায়তা বাড়াতে ও বেসামরিকদের যুদ্ধ থেকে দূরে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আরব বিশ্বের মার্কিন মিত্ররা গাজার মানবিক সংকটে তাদের গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহান্তে, সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আয়োজিত একটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সম্মেলনে মিসর, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের শীর্ষ কূটনীতিকরা এবং সেইসঙ্গে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের মহাসচিব উপস্থিত ছিলেন।

শীর্ষ সম্মেলনে আরব নেতারা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন কিন্তু ব্লিঙ্কেন এই প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তার যুক্তি ছিল, এমনটা করা হলে হামাস পুনরায় সংগঠিত হতে এবং ইসরায়েলের ওপর আরেকটি আক্রমণ চালানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাবে।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইসরায়েল উত্তর গাজার এলাকায় দৈনিক চার ঘণ্টার সামরিক অভিযানের বিরতি দিতে সম্মত হয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অবস্থান স্পষ্ট করলো ভারত
Next post যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য নির্বাচনে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো
Close