Read Time:5 Minute, 48 Second

বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সরব অবস্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচন নিয়ে ওয়াশিংট কি বলছে, তা এখন কূটনীতিক অঙ্গন ছাড়িয়ে টংয়ের চায়ের দোকানেও আলোচনা হচ্ছে। ওয়াশিংট যে বার্তাই দিক সেগুলো ছাড়িয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গতিবিধি আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকাল ১১টায় পরাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রবেশ করেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
প্রায় দেড় ঘণ্টা চলে বৈঠক। বৈঠক শেষে পদ্মা থেকে বেরিয়ে পড়েন পিটার। কথা বলেননি গণমাধ্যমের সঙ্গে। পদ্মার বাইরে অপেক্ষমান কিছু গণমাধ্যমকর্মী আশা করছিলেন অন্তত পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক নিয়ে কথা বলবেন। কিন্তু একই ভেন্যুতে অন্য পোগ্রাম থাকায় সচিবকে আর পায়নি গণমাধ্যম।
একই দিন বেলা আড়াইটায় শ্রীলঙ্কাকে মেডিকেল সামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ছাড়াও পররাষ্ট্রসচিব উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের থেকে কোনো প্রশ্ন নেওয়া হয়নি। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন পররাষ্ট্রসচিব।
পরে বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না পররাষ্ট্রসচিব। সাধারণত, প্রধানমন্ত্রীর সফরের সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত থাকেন পররাষ্ট্রসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রসচিব এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করেন। তবে কোনো উত্তর মেলেনি। ড. মোমেন বলেন, সেটা ওনাকে জিজ্ঞেস করেন। অন্যদিকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উনি (সচিব) মন্ত্রণালয়ে থাকেন। আপনারা চাইলেই তাকে পান।
পররাষ্ট্রসচিবের দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, অনেক শিডিউল পড়ে যাওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে থাকতে পারেনি পররাষ্ট্রসচিব।
পদ্মায় পররাষ্ট্রসচিব-রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বৈঠক হয়েছে স্বীকার করলেও আলোচনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ বৈঠককে রুদ্ধদ্বার বৈঠক বলেই মনে করছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর ধারণা, বৈঠকে সমসাময়িক বিষয়ে আলোচনা হযেছে। এক্ষেত্রে ২৮ অক্টোবরের সংঘাত-সহিংসতা এবং পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। হতে পারে, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে সংলাপের তাগিদ দিয়ে ক্ষমতাসীন এবং বিরোধী ছাড়াও অন্যন্যা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ মীমাংসার বার্তা দিয়েছেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো আরও বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয় (ইইউ) সংলাপের বার্তা দিলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংলাপের বার্তার বিষয়টি একেবারে নতুন। গত মঙ্গলবার প্রধান নিরবাচন কমিশনারের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত শর্তহীন সংলাপের কথা বলেছে।
বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মুখ খুলছে না মার্কিন দূতাবাসও। তবে বৈঠক নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে কূটনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেছেন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফিন ইবেলি।
মুখপাত্র বলেন, কূটনীতিক হিসাবে আমরা বিভিন্ন ধরণের সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি পযায়ে কথা বলি। সুশীল সমাজ এবং বেসরকারী সংস্থা, গণমাধ্যমকর্মী, ব্যবসায়ীক নেতা, চেম্বার অফ কমার্স, রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ অনেকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়। এসব যোগাযোগ এবং আলাপে বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে বুঝতে এবং আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ‘সার্বভৌম ফিলিস্তিনি মাতৃভূমি’র আহ্বান পোপের
Next post আবারও দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
Close