নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েল-গাজা পরিস্থিতি নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের পর বিতর্কের মুখে পড়েছেন জাতিসংঘ প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তার পদত্যাগের দাবিও করেছেন ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত। জবাবে গুতেরেস বলেছেন তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
ইসরায়েলের অভিযোগে পাল্টা জবাব দিয়ে বুধবার এক বিবৃতিতে অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) নিরাপত্তা পরিষদে আমার কিছু বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যায় আমি হতবাক। যেন আমি হামাসের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ন্যায্যতা দিচ্ছি। তাদের দেওয়া ব্যাখ্যাটি মিথ্যা। এটি বিপরীত ছিল।’
তিনি আরও বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) আমার বক্তব্যের শুরুতে আমি স্পষ্টভাবে বলেছিলাম এবং সেটি উদ্ধৃত করছি; ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ এবং নজিরবিহীন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছি। ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লোকদের হত্যা, আহত এবং অপহরণ বা বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রকেট ছোড়া কোনোকিছুর বিনিময়েই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।’
গুতেরেস বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, আমি ফিলিস্তিনি জনগণের ক্ষোভের কথা বলেছিলাম এবং তা করতে গিয়ে আমি স্পষ্টভাবে বলেছি এবং আমি উদ্ধৃতি দিয়েছি; কিন্তু ফিলিস্তিনি জনগণের অভিযোগ হামাসের ভয়ঙ্কর হামলার ন্যায্যতা দিতে পারে না। তারপরে আমি মধ্যপ্রাচ্য সংকটের সমস্ত দিক সম্পর্কে আমার সার্বিক অবস্থান উল্লেখ করে আমার বক্তব্য চালিয়ে গেলাম।’
ভুল ব্যাখ্যার প্রসঙ্গে জাতিসংঘ প্রধান বলেন, ‘আমি মনে করি রেকর্ডটি সোজাভাবে করা দরকার ছিল। বিশেষ করে ভুক্তভোগী এবং তাদের পরিবারের প্রতি সম্মানের জন্য।’
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান
এর আগে গুতেরেসের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, এটি অসম্মানজনক যে গুতেরেস তার মন্তব্য জন্য প্রত্যাহার করেননি বা এর জন্য ক্ষমা চাননি। মঙ্গলবার জারি করা দাবির পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেছেন, মহাসচিবকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গুতেরেস তার মূল বক্তব্যে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের যে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন দেখতে পাচ্ছেন, তা নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি স্পষ্টভাবে বলছেন, সংঘাতে কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার বিষয়ে গুতেরেস বলেছেন, হামাসের হামলা শূন্য থেকে (কারণ ছাড়া) হয়নি। ফিলিস্তিনের মানুষ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারির শিকার। তারা তাদের ভূখণ্ড বসতিতে (অবৈধ ইহুদি বসতি) পরিণত হতে দেখেছেন। সহিংসতায় জর্জরিত হতে দেখেছেন।
বক্তব্যের পর ইসরায়েল এবং জাতিসংঘের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মহাসচিবের পদত্যাগের পাশাপাশি জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের জন্য ভিসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
More Stories
বাংলাদেশে ব্যবসার অনুমোদন পেলো স্টারলিংক
স্টারলিংক টেলিকমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রেশন প্রদান করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে (নন-জিওস্টেশনারি অরবিট) লাইসেন্স পেলেই বাংলাদেশে...
ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ধর্মঘটের ডাক
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিনের ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস নামের একটি গোষ্ঠী। সোমবার...
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ১৬০০
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৪ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৪০৮ জন। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন...
চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে ঈদ রোববার
সৌদি আরবের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে দেশটিতে কাল রোববার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত...
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্প, ১৪৪ জনের মৃত্যু
মিয়ানমারে শক্তিশালী জোড়া ভূমিকম্পের আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৩০ জন। শুক্রবার (২৮ মার্চ)...
পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে : শেহবাজ শরিফ
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর...