Read Time:6 Minute, 29 Second

বিএন‌পির সি‌নিয়র যুগ্ম-মহাস‌চিব অ্যাডভোকেট রুহুল ক‌বির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে হারে দাম বাড়ছে, আগে তো নিম্নবর্তী মানুষ কিনতে খেতে পারত না। এখন সেটা মধ্যবিত্ত পর্যন্ত চলে এসেছে। তারা পারছে না কারো কাছে হাত পাততে। পারছে না ভিক্ষা করতে। তাদের যে আয় সে আয় দিয়ে কোনো কিছু কিনে খেতে পারছে না। একটি ডিম কিনতে যদি ১৭ টাকা লাগে তাহলে ফ্লাইওভার দেখিয়ে আপনি কী করবেন। পৃথিবীর সমস্ত ফ্যাসিস্টরাই এই ধরনের কাজ করেছে।

তিনি বলেন, এ রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রকে অধঃপতিত করেছে তার ভয়ংকর অত্যাচারিত শাসনের মধ্য দিয়ে। শেখ হাসিনা এখন কী করতে চান। তিনি কি ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনের মতো পুনরাবৃত্তি করবেন? তিনি জনগণের দাবি, শৃঙ্খলিত যে গণতন্ত্র, দম বন্ধ করা পরিস্থিতি থেকে দেশকে মুক্ত হতে দিতে চান না।

শুক্রবার বিকালে ঢাকা রি‌পোর্টার্স ইউ‌নি‌টি‌তে জিয়াউর রহমান আর্কাইভ (জেড আর এ) এর উ‌দ্যোগে ফ্যাসিবাদবি‌রোধী চিত্রকর্মশালা ও ক‌বিতাপাঠ অনুষ্ঠা‌নে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

রিজভী বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) তার মন্ত্রীদেরকে দিয়ে বলাচ্ছেন পৃথিবীর সব দেশ ঠিক হয়ে গেছে। ঠিক হয়ে গেছে মানে আপনার অধীনে নির্বাচন? আর আপনার অধীনে নির্বাচন মানে ২০১৪-১৮ নির্বাচনের মতো। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ টিতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। বাকিগুলোতে উপস্থিত ছিল ৫%। আর ২০১৮ সালের নির্বাচন করেছেন রাতে। ভোর হওয়ার আগেই ব্যালটবক্স পূর্ণ হয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, জনগণের কথা, আন্তর্জাতিক শক্তির কথা কারো কথাই ঠিক না আপনার কথাই ঠিক? কীসের জন্য? কীসের জন্য এটাতো আমরা বুঝি। পৃথিবীর প্রতিটি স্বৈরাশাসক তাই করে। সব সময় তাই করেছে… ফ্লাইওভার, উড়াল সেতু, হাইওয়ে দেখায় যাতে চোখে পড়ে একটু। কিন্তু সেই দেশের মানুষ একটা ডিম কিনতে পারে না। বিশ্বের সব স্বৈরাশাসকরা এগুলোই দেখিয়েছে। কিন্তু তারা কোনো প্রাইমারি স্কুল করেনি, ভালো হাসপাতাল করেনি। মানুষের যে হাহাকার অর্ধাহার অনাহার এগুলো তাদের চোখে পড়ে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপি’র এই নেতা বলেন, আপনার অধীনে নির্বাচন কী সেটাতো আমরা জানি। সেই নির্বাচনে ভোটারের দরকার নাই দেশের জনগণের দরকার নেই। বিরোধী দল দরকার নেই।

২০১৮ সালের নির্বাচনের একটি ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফরিদপুরের নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের লোকেরা মাইকিং করে হুমকি দিয়েছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে ভোটকেন্দ্রে না যেতে। তারা নৌকায়ও ভোট চাচ্ছে না। বিরোধী দলকে হুমকি দিচ্ছে যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায়। কোনো নির্বাচনে প্রার্থী বা বিরোধী প্রার্থী থাকলে সেই প্রার্থীর পক্ষে মাইকিং করে বা পোস্টার ছাপায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন সেই নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছে না তারা ভোটারদেরকে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে। তার কারণ শেখ হাসিনা কোনো ভোট চায় না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার নেতাকর্মীরা বলেন আমরা সংবিধানের বাহিরে যাব না। আপনারা কি বরাবরই সংবিধানের বাইরে যান নাই? ১৯৯৫-৯৬ সালে যে বিধ্বংসী আন্দোলন করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তখনতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানে ছিল না। তখন আপনারা যে জ্বালাও পোড়া করেছেন তত্ত্বাবধায়ক এর দাবি তুলেছেন। তখন সব দল মিলে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হলো। তাহলে আজ যাবেন না কেন? এক মুখে দুই কথা হয় কীভাবে? আজ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যারা আপনার হালুয়া রুটি খেয়েছে তাদের ভিন্ন কথা। দেশের অধিকাংশ মানুষ এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিকামী মানুষ সবাই দাবি তুলছে কিন্তু আপনি কারো কথাই শুনছেন না।

আ‌য়োজক সংগঠ‌নের সম্পাদক সঞ্জয় দে রিপ‌নের সভাপ‌তি‌ত্বে অনুষ্ঠা‌নে আরও বক্তব্য দেন চিত্র শিল্পী ড. আব্দুস সাত্তার, বিএন‌পির সাং‌স্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উ‌দ্দিন আহ‌মেদ উজ্জল, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. র‌ফিকুল ইসলাম. ঢাকা সাংবা‌দিক ইউ‌নিয়‌নের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান প্রমুখ।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বিএনপির সঙ্গে কোনো আপস হবে না : ওবায়দুল কাদের
Next post যুক্তরাষ্ট্রের সুপারিশকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Close