ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সদস্যরা শতাধিক বয়স্ক নারী, শিশুসহ কয়েকটি পরিবারের সব সদস্যকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে গেছে। এই প্রথমবারের মতো এতো সংখ্যক ইসরায়েলি নাগরিককে একসঙ্গে অপহরণ ও বন্দী করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়টি ইসরায়েলের নাগরিকদের পুরোপুরি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। সেই চাপ গিয়ে পড়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ তার কট্টর ডানপন্থী জোট সরকারের ওপর। খবর টাইমস অব ইসরায়েল।
হামাসের হামলার জেরে গাজায় সর্বাত্মক যুদ্ধসহ অবরোধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেলআবিব তা এখন ঝুলে আছে গাজায় বন্দী নিজ নাগরিকদের জীবন ও নিরাপত্তার সঙ্গে। ইসরায়েলি নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে হামাস।
এর আগে, ২০০৬ সালে একজন ইসরায়েলি সেনাকে ধরে নিয়ে যায় হামাসের সদস্যরা। জিলাড শালিট নামের সেই সেনার জীবিত ফেরা নিয়ে তেলআবিব সরকারের উপর চাপ বাড়াতে থাকে বিরোধীদলগুলোসহ ইসরায়েলের সাধারণ জনতা।
সেই সেনাকে উদ্ধার করতে অবরুদ্ধ গাজায় ভয়াবহ অভিযান চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। তবে শেষে হামাসের সঙ্গে একধরনের আপোষে যেতে বাধ্য হয় ইসরায়েল।
তেলআবিবে আটক এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেয়ার শর্তে মুক্তি পান ইসরায়েলি সেনা। মুক্তি পাওয়া বন্দীদের মধ্যে ছিল দুর্ধর্ষ অপরাধীসহ কয়েকজন হত্যাকারীও। তবে এবার শতাধিক ইসরায়েলি বন্দীর মুক্তির জন্যে হামাসের কত সদস্যকে বন্দিদশা থেকে নেতানিয়াহু সরকারের মুক্তি দিতে হতে পারে তাই নিয়ে শঙ্কা দেখা গেছে।
সেই সঙ্গে নেতানিয়াহুর জোট সরকারে থাকা কট্টরপন্থী শরিকদলগুলো এই ধরনের গণ-মুক্তি মেনে নেবে কী না তা নিয়েও শঙ্কিত নেতানিয়াহু। হামাসের চেয়ে অনেক ছোট গোষ্ঠী প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে, তাদের কাছে এককভাবে ৩০ ইসরায়েলি নাগরিক বন্দী রয়েছেন।
সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার একদিন পর সোমবার (৯ অক্টোবর) গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক অবরোধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্ট আজ সোমবার এই ঘোষণা দেন। পাল্টাপাল্টি সংর্ঘষের দ্বিতীয় দিনে রোববার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের অনুমোদন দেয়, যাতে দেশটি সর্বাত্মক যুদ্ধে যেতে পারবে।
যুদ্ধের অনুমোদনের পরপরই গাজায় সামরিক হামলা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। এর আগে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যাকা গুড়িয়ে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তখন থেকে ধারণা করা হচ্ছে ইসরায়েল যেকোন সময় পদাতিক বাহিনী দিয়েও যুদ্ধে অংশ নেবেন।
শনিবার (৭ অক্টোবর) হামাস যোদ্ধারা ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের গানের অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য করে সশস্ত্র হামলা চালায়। উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলের সুপারনোভা সংগীত উৎসব স্থলে আড়াই শতাধিক মানুষের মৃতদেহ পেয়েছেন।
More Stories
পেন্টাগন থেকে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথি ফাঁস
ইসরায়েলে ১ অক্টোবর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথির সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও...
হামাসপ্রধান সিনওয়ার নিহতের গুঞ্জন, খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে...
বাংলাদেশিসহ সব শান্তিরক্ষীকে সরিয়ে নিতে বললেন নেতানিয়াহু
লেবাননে শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্বরত সব সেনাকে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রোববার...
ইয়েমেনে সম্মিলিত বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
ইয়েমেনের হোদেইদাহ বিমানবন্দর, সানা এবং ধামার সিটিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত টেলিভিশন চ্যালেন...
মুসলিমদের শত্রু এক: খামেনি
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, আমরা যদি এক হতে পারি...
ইসরাইলকে আরও কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল যদি ‘সর্বনিম্ন ভুল’ করে তাহলে তেহরান নিশ্চিতভাবে আরও ‘শক্তিশালী এবং কঠোর প্রতিক্রিয়া’...