Read Time:6 Minute, 6 Second

সিলেটে চারদিনব্যাপী ১১তম বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ সংলাপে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সভাপতির বক্তব্যে বলেছেন, ‘আগামীতে ভারতের সঙ্গে ভিসামুক্ত সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ। প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে চিকিৎসাসহ নানা কারণে ভারত গমন বেড়েছে।’ এ সময় ভিসা প্রক্রিয়ায় সহজ করার জন্য তিনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৫টায় গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে শুরু হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা সবসময় মনে করি ভারত বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। বাংলাদেশ-ভারত এখন সম্পর্কের স্বর্ণালী সময় অতিক্রম করছে। দু’দেশের মধ্যে এই সংলাপ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায় দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এ ধরনের সংলাপ থেকে আমরা প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারবো।

পরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, ‘তলে তলে’ কিছু হয়ে থাকলে আমি জানি না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি ভিসানীতি নিয়ে বলেছেন, কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসানীতি? তলে তলে আপস হয়ে গেছে। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়ে নীতিগতভাবে বাংলাদেশ ও ভারত এক বলেও জানান। কোনো একটা কারণে এটি আটকে আছে। সময়ের সঙ্গে ঠিক হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

সংলাপের প্রথম দিন উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায়। এ সম্পর্ক দিনে দিনে আরও সুসংহত হচ্ছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারতের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গতিশীল নেতৃত্বের কারণে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন অনেক গভীরে।

স্পিকার বলেন, ‘নেইবারহুড ডিপ্লোমেসির বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি ঘটছে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কও এর বাইরে নয়। ইতিমধ্যে দুদেশের সম্পর্কে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, নিজেদের কল্যাণে দুদেশকে একযোগে কাজ করতে হবে।

তিনি গঙ্গা চুক্তি সম্পন্ন হলেও তিস্তা এখনো ঝুলে রয়েছে-সেটিও বাস্তবায়নে দুদেশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দুদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষে-মানুষে সম্পর্ক বাড়ানোও জরুরি বলে স্পিকার মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সংসদীয় কূটনীতি জনপ্রিয় হচ্ছে।

স্পিকার বলেন, ভারত-বাংলাদেশের পার্লামেন্টকেও এভাবেই কাজ করতে হবে। কারণ দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে ভারত-বাংলাদেশ সংসদের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর দরকার। তিনি নারী সংসদ সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন, বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং নেইবারহুড মডেলের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মুনতাসির মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্টানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ভারতের সাবেক মন্ত্রী শ্রী এম জে আকবর, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা ও ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য স্বপন দাশ গুপ্ত।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ উচ্চ পর্যায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদূঢ় করতে এবং উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ব্যবসা উন্নয়নের স্বার্থে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই সংলাপ শুরু হয়েছে। সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে ৬ জন মন্ত্রী, ২০ জন সংসদ সদস্যসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নিয়েছেন। সংলাপ উপলক্ষে ভারত থেকে ১৪০ জনের প্রতিনিধি দল সিলেটে এসেছেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post পেশাজীবী সমাবেশে মির্জা ফখরুল : গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনো আপোষ নেই
Next post শান্তি রক্ষায় পরমাণু শক্তি ব্যবহার হবে: প্রধানমন্ত্রী
Close