যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে অর্থায়ন করার যে বিল আনা হয়েছিল, তা শুক্রবার বাতিল করেছে কট্টরপন্থী রিপাবলিকানরা। এতে রোববার থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। যা দেশটিতে ‘শাটডাউন’ হিসেবে পরিচিত। তবে হাউজ স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি আশা ছাড়ছেন না। শনিবার আবারও ভোট হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম যেন বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকারকে তহবিল জোগানোর মেয়াদ ৩০ দিন বাড়ানোর জন্য হাউসে বিল আনা হয়েছিল। সেখানে রিপাবলিকানদের আপত্তিতে বিলটি অনুমোদন পায়নি। চূড়ান্ত পর্বে বিলটি ২৩২-১৯৮ ভোটে পরাজিত হয়েছে। সেই বিলে রিপাবলিকানদের পছন্দ অনুযায়ী ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি অভিবাসন সীমিত করার প্রস্তাব ছিল। সে কারণে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত সিনেটে এটি পাস হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল খুবই কম।
হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। কিন্তু সেখানে এই বিল পাস না হওয়ার কারণে এখন শাটডাউন এড়ানোর পথ নেই বলেই মনে হচ্ছে। এতে জাতীয় পার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ৪০ লাখ কেন্দ্রীয় কর্মীর বেতন-ভাতা পরিশোধ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যেতে পারে আর্থিক খাতের নজরদারি থেকে বৈজ্ঞানিক গবেষণার তহবিল।
ভোটাভুটির পর হাউসের স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি বলেন, যেসব রক্ষণশীল নীতির কারণে ডেমোক্র্যাটরা বিচ্ছিন্ন বোধ করছেন, সেগুলো ছাড়া এই তহবিলের মেয়াদ সম্প্রসারণের বিল এখনও পাস হতে পারে। কিন্তু এরপর কী হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে তিনি রাজি হননি। শনিবার সেখানে আরও ভোটাভুটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
হাউস স্পিকার ম্যাককার্থি বলেন, হাল ছেড়ে দেওয়াই কেবল ব্যর্থতা।
এদিকে সিনেট আবার সময়মতো কাজ করবে কিনা, তাও পরিষ্কার নয়। শনিবার বিকেলে সিনেটে দ্বিদলীয় বিল উত্থাপিত হওয়ার কথা, যেখানে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই সরকারকে তহবিল জোগানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রক্রিয়াগত বাধার কারণে আগামী মঙ্গলবারের আগে চূড়ান্ত ভোট নাও হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন বলেছেন, সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও শিশুদের জন্য পরিচালিত কর্মসূচির গতি কমে যেতে পারে। সেই সঙ্গে থমকে যেতে পারে বড় অবকাঠামোগত প্রকল্পের গতিও।
এবারও শাটডাউন হলে তা হবে এক দশকের মধ্যে চতুর্থ শাটডাউন। মাত্র চার মাস আগে জাতীয় ঋণসীমা বৃদ্ধি নিয়ে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক দল যেভাবে পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিল, তখনও এই শাটডাউনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। তখন তা এড়ানো গেলেও এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমানে প্রভাব পড়েছে, ক্ষুণ্ন হয়েছে দেশটির ভাবমূর্তি।
More Stories
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প–মামদানি বৈঠকে প্রশংসা আর সৌহার্দ্যের বার্তা
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। দুই...
যুক্তরাষ্ট্রের ‘এইচ-১বি ভিসা’ পুরোপুরি বাতিলের উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসনের
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি দক্ষ কর্মী আনার সবচেয়ে বড় ভিসা কর্মসূচি এইচ-১বি পুরোপুরি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভিসা ফি শতগুণ বাড়ানোর...
আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিবিসিকে চিঠি পাঠালেন ট্রাম্প
ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার (১০ নভেম্বর) বিবিসির...
৮০ হাজার অ-অভিবাসী ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮০ হাজার অ-অভিবাসী ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো...
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: মামদানির হাতে ব্যালট-খামে বাংলায় লেখা
নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার আজ মঙ্গলবার নগরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনের লক্ষ্যে...
অন্য দেশের ‘সরকার বদলের’ মার্কিন নীতি শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড
কোনো দেশের সরকার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র যে নীতি মেনে আসছিল, তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা...
