জাতীয় নির্বাচন ঠেকানোর কথা যারা বলছেন, তাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ নিজের সংবিধান অনুযায়ী চলবে এবং অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন আয়োজন করবে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির আন্দোলন ও আল্টিমেটামের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আল্টিমেটাম তো শেষ। গোলাপবাগের গরুর হাটে আন্দোলন শেষ। তারপর কত পদযাত্রা দেখলাম। তারপর দেখলাম মরণযাত্রা। শেষ আল্টিমেটাম। ৪৮ ঘণ্টা তো চলে গেল। এখন কী করবেন?’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ডাকে পাবলিক নাই, ভুয়া। আন্দোলন ভুয়া। ৩২ দল ভুয়া। তত্ত্ববধায়ক ভুয়া। এই ভুয়া আন্দোলন এই দেশের মানুষ মানে না। এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। বৃহৎ শক্তির হুমকিকে বন্ধুবন্ধুকন্যা পরোয়া করে না আর আপনারা কী হুমকি দেবেন? নির্বাচন হতে দেবেন না? দেখি, কে নির্বাচন ঠেকাতে আসে।’
আওয়ামী লীগকে নিষেধাজ্ঞা আর ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, মন্তব্য করে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন আর ভয় দেখায় মির্জা ফখরুল। কি অদ্ভুদ কাণ্ড! ভুয়া তো বটেই। ৪৮ ঘণ্টা শেষ, আল্টিমেটাম শেষ। অতঃপর কী? কী হবে? খেলা তো হবে। ক্যাপ্টেন আমেরিকায় আছে। তিনি আসলে জোরদার খেলা হবে। ক্যাপ্টেন আসুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘একাত্তরে নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পেলে বাংলাদেশ কোনোদিনই স্বাধীন হতো না। নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করলে বঙ্গবন্ধু এই দেশ স্বাধীন করতে পারত না। আজকে তাই নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, সমৃদ্ধি, সোনালী অর্জন আমরা রাখতে পারব না।’
আমাদের গণতন্ত্র আমাদের সংবিধান ঠিক করবে, উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নির্বাচন আমাদের সংবিধান নির্ধারণ করবে। আমাদের দেশে আমরা কিভাবে চালাব, আমরা ঠিক করব। তত্ত্বাবধায়ক মানি না। ওটা এখন মরা লাশ। তত্ত্বাবধায়কের মরা লাশ আমাদের কাছে এনে লাভ নেই। ২০০১ সালে দেখেছি, ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনেরটাও দেখেছি। বাংলাদেশে এর ইতিহাস জানা আছে। ওই তত্ত্বাবধায়ক দেখিয়ে একটা অস্বাভাবিক সরকার করবেন, সেটা আর হবে না। এটা মানি না।’
তিনি বলেন, কে আসুক, কে বলুক, তাতে কিছু যায়-আসে না। জো বাইডেন সাহেব ট্রাম্পকে সামলাতে পারছেন না, বাংলাদেশকে ধমক দেন। জনমত জরিপ বলে, ট্রাম্প এগিয়ে আছে। ৬ জানুয়ারিতে ছয়টি প্রাণ শেষ। রক্তে ভেসে গেলো ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল হিল। এটা কেমন গণতন্ত্র? ২০১৮ ও ২০১৪ সালে আমার দেশের নির্বাচনে কোনো প্রাণ ঝড়েনি। আপনাদের দেশে প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। শিশু মরছে, গুলি হচ্ছে। এমন দিন নেই, যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না। আবার দালাল লাগাইছেন, ফখরুল ইসলাম নতুন দালাল। ওই দালার আবার ভয় দেখায়। নির্বাচন করবে না। ভয় দেখায়, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না।’
‘আমি বলছি, শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, নির্বাচন মানি না। শেখ হাসিনা ছাড়া এমন কোনো নেতা নেই, যাকে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে। ষড়যন্ত্র করে ওই নেতাকে বাদ দেবেন? এই বাংলাদেশকে আবার অন্ধকারে খাদের কিনারায় নিয়ে যাবেন, আমরা সেটা হতে দেবো না।’
আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে নাশকতা করলে হাত ভেঙে দেওয়া হবে।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...