Read Time:6 Minute, 48 Second

সরকার ‘একতরফা’ নির্বাচন করলে এবার জনগণ রুখে দেবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এদেশের মানুষ এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা আর সম্ভব হবে না। এবার আর ওয়াকওভার পাবে না আওয়ামী লীগ। এবারকার মানুষ তারা রুখে দাঁড়াবে।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে ‘উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরাম’ ও ‘বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম’র যৌথ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ‘তোমার প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা প্রায়ই বলে যে, বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে, বিএনপি চক্রান্ত করছে। আরে ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত তো তোমরা করছো। এই দেশের মানুষের সমস্ত অধিকারগুলোকে তোমরা কেড়ে নিয়েছো, ভোট দাও না। আবার একটা ভোটের দিকে যেতে চাও যেন আগের মতোই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় খোলা মাঠে টফি নিয়ে চলে যাবে।

তরুণ ও যু্বকদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কথা একটাই এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। আপনারা উঠে আসুন। প্রতিরোধ গড়ে তুলন। এই যে ভয়াবহ শক্তি যে আমার জাতিকে ধবংস করে দিচ্ছে, যে আমার ভবিষ্যতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, যে আমার রাষ্ট্রকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে চলেছে সেই ভয়াবহ সরকারকে অবশ্যই প্রতিরোধ করে দমন করতে হবে, বিজয় লাভ করতে হবে।

তিনি বলেন, আসুন আমরা সামনে দিকে এগিয়ে যাই, বিজয় অর্জন করি। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবকে দেশে ফিরিয়ে এনে সত্যিকার অর্থে কারা মুক্তি দিবস পালন করি। আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি চরম অসুস্থতা নিয়ে গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন তাকে মুক্ত করে তাকে সুস্থ করে আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনি। আমাদের হাজারো নেতা-কর্মী যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের ঋণ শোধ করি এবং যে ৬/৭শ নেতা-কর্মী গুম হয়েছে তাদের পরিবারকে সাত্বনা দেই, ৪০ লক্ষ মানুষ যারা নির্যাতত হচ্ছেন তাদের মুক্ত করি। মোট কথায় সমগ্র বাংলাদেশকে মুক্ত করি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, (নেতা-কর্মীরা) আন্দোলনকে এমন একটা পর্যায় নিয়ে গেছেন এখন সরকার প্রমাদ গুনছে, সরকার ভয় পেয়েছে। ভয় পাওয়ার কারণে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে কিভা্বে এইসমন্ত গণতন্ত্রের সৈনিকদেরকে পর্যদুস্ত করা যায়, তাদের আটকিয়ে রাখা যায়।

কিছুদিন আগেও তারা (সরকার) বলেছে, বিএনপি নাই। এখন যখন বিএনপি মাটি খুঁড়ে বেরুচ্ছে। তখন তারা আবার প্রমাদ গুনতে শুরু করেছে। তাই আজকে আমাদের লক্ষ্য একটাই, আমাদের আন্দোলনকে, আমাদের সংগ্রামকে বিজয় অর্জন করে আমাদের ফিরে আসতে হবে। এর আগে ফিরে আসার সুযোগ নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পত্রিকায় প্রকাশিত একটা খবর আমাকে তাড়িত করেছে। একজন গ্রাচুয়েট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস একজন ছেলে, সে ল’ পাস করেছে আইনজীবী হিসেবে জয়েন করেছে। আদালতে সে সিনিয়রের কাছ থেকে ৫’শ টাকা করে পায়। তাতে তার সংসার চলে না, মা ও পরিবারকে ভরণপোষণ করতে পারে না। সেজন্য শুক্র ও শনিবার মোটর সাইকেল রাইড করে। সেখানেও সে যে আয়টা করে তাতে দুই বেলা দুইমুঠো খেতে পারে ঠিক মতো। একটা রুটি একটা ডিম খেতে পারে না। এই হচ্ছে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা, এটাই দেশের সত্যিকার চিত্র।

আর তারা উন্নয়ন উন্নয়ন করে, উন্নয়ন হয়েছে তাদের, তারা পকেটে টাকা ভরেছে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, বাড়ি-ঘর তৈরি করেছে। সেটাকে বজায় রাখার জন্য তারা ক্ষমতায়কে অন্যায়ভাবে বেআইনিভাবে জোর করে দখল করে রাখতে হবে। আর কোনো কথা নয়, একটাই কথা এবার আমাদের জয়ী হতে হবে, এদের পরাজিত করতেই হবে, জনগনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুল রহমান খোকন, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের বিলকিস ইসলাম, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আরিফা সুলতানা রুমা, স্বেচ্ছাসেবক দলের নাজমুল হাসান, ছাত্র দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা ওয়াজেদকে মনোনয়ন
Next post জি-২০ সম্মেলনে যাচ্ছেন না শি জিনপিং, হতাশ বাইডেন
Close