Read Time:5 Minute, 6 Second

যুক্তরাজ্যে দুই দশকের মধ্যে এ বছর সর্বোচ্চসংখ্যক এক লাখ ৭৫ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এর মধ্যে এ বছরই জুন পর্যন্ত ৭৮ হাজার ৭৬৮টি আবেদন করা হয়েছে। এসব আবেদনকারীর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে আলবেনিয়া এবং পঞ্চম স্থানে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ডেইলি মেইলের।

পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের জুনের শেষ নাগাদ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, সে সিদ্ধান্তের জন্য এরা সবাই অপেক্ষা করছেন। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি। গত বছর একই সময় আবেদন পড়েছিল ১ লাখ ২২ হাজার ২১৩টি। ২০১০ সাল থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রেকর্ড রাখা শুরুর পর এ বছরের আবেদনের সংখ্যা রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।

এদিকে একজন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আবেদনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের জন্য কমপক্ষে ছয় মাস অপেক্ষা করতে হয়। সেখানে জুনের শেষ নাগাদ পর্যন্ত এমন অপেক্ষমাণ রয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬১টি আবেদন। এ সংখ্যা গত বছরের ৮৯ হাজার ২৩১টি আবেদনের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি।

পরিসংখ্যানে আরও দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে ৭৮ হাজার ৭৬৮টি আশ্রয়ের আবেদন পড়েছে। এ আবেদনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ৯৭ হাজার ৩৯০ জন। গত বছরের তুলনায় এটি ১৯ শতাংশ বেশি।
ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আবেদনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ রয়েছেন আলবেনিয়ার নাগরিক। আলবেনিয়া থেকে ১১ হাজার ৭৯০টি আবেদন পড়েছে। এদের মধ্যে ৭ হাজার ৫৫৭ জনই এসেছেন নৌকায়।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে আছেন আফগানরা। আফগানদের পক্ষ থেকে আবেদন জমা পড়েছে ৯ হাজার ৯৬৪টি। এর আগের ১২ মাসের (৫ হাজার ১৫৪টি) তুলনায় এ সংখ্যাও দ্বিগুণ।

এরপরই আছে যথাক্রমে ইরানের ৭ হাজার ৭৭৬ জন, ভারতের ৪ হাজার ৪০৩, বাংলাদেশের ৩ হাজার ৬২২, ইরাকের ৩ হাজার ৪৭২ জন এবং সিরিয়ার ৩ হাজার ৪২২ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৯ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে গিয়েছেন। গত বুধবারও ৩৪৫ জন এ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন।

এদিকে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনপ্রত্যাশী বা শরণার্থী বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ২০২২-২৩ হিসাব বছরে ৩৯৭ কোটি পাউন্ডে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ২০২১-২২ সালে ছিল ২১২ কোটি পাউন্ড। সে হিসাবে এ বাবদ ব্যয় বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে। আর এক দশক আগে ২০১২-১৩ বছরে ছিল মাত্র ৫০ কোটি ২ লাখ পাউন্ড।

অবৈধ অভিবাসন আইনের আওতায় ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকারী ‘নৌকা প্রতিরোধ’ করার প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। অভিবাসনপ্রত্যাশী রুয়ান্ডার মতো তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলো থেকে নৌকায় করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল থামেনি। আবার সুনাকের প্রতিশ্রুতি বর্তমানে আদালতে আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

বিভিন্ন উপলক্ষ্যে ভিসা দেওয়া অবশ্য ব্রিটেন বন্ধ বা সীমিত করছে না। কাজ, পড়াশোনা বা পারিবারিক কারণে যুক্তরাজ্যে আসা লোকদের জন্য বা সরকারের সেটেলমেন্ট স্কিমগুলোর একটির মাধ্যমে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ভিসা পেয়েছে।

২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত মোট ১৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪৭১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। এটি গত বছরের (১১ লাখ ২৫ হাজার ১৫৫) একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post প্রবাসীদের কাছে নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
Next post দুবাইয়ের মর্গে পড়ে আছে প্রবাসীর লাশ
Close