যুক্তরাষ্ট্র সরকার ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে সংঘটিত ‘অপরাধের’ প্রতি মনোযোগ দেবে, এমন আশ্বাস দিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মানবাধিকার কর্মকর্তা সোফিয়া মেউলেনব্রেগ ১৯৭৭ সালের নিহত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পারিবারের সদস্যদের নেটওয়ার্ক ‘মায়ের কান্না’র প্রতিনিধিদের এই আশ্বাস দেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর আমেরিকান ক্লাবে নির্ধারিত বৈঠকে ‘মায়ের কান্না’র একটি প্রতিনিধিদল সোফিয়া মেউলেনব্রেগের সঙ্গে দেখা করে। তারা সোফিয়ার কাছে এই ‘হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতন’ সংক্রান্ত নথিপত্র হস্তান্তর করে। অক্টোবরে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল কিন্তু নথি অনুযায়ী তাদের দোষী সাব্যস্ত ও কারাগারে থাকার কথা জানিয়ে পরিবারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল ডিসেম্বরে। ‘মায়ের কান্না’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
‘মায়ের কান্না’র আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লেলিন মার্কিন মানবাধিকার কর্মকর্তাকে বলেন, ‘তৎকালীন সামরিক শাসক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এই জঘন্য অপরাধের মাস্টারমাইন্ড এবং সেই বিএনপিই এখনো ন্যায়বিচারের পথে প্রধান বাধা।’
নথি গ্রহণ ও প্রতিনিধি দলের দুর্ভোগের কারণ শোনার জন্য মার্কিন দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান নেটওয়ার্ক প্রতিনিধিরা। সোফিয়া তার সঙ্গে দেখা করতে আসার জন্য প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ ও ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানান। ‘মায়ের কান্না’ সদস্যরা ন্যায়বিচারের দাবি সম্ভাব্য সব রকম উপায়ে এবং সব জায়গায় উত্থাপন করার জন্য মার্কিন সরকারকে অনুরোধ করে।
বৈঠকে ‘মায়ের কান্না’র আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লেলিনের সঙ্গে বিলকিস চৌধুরী, নেটওয়ার্কের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার প্রশান্ত বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কামরুজ্জামান লেলিন বলেন, ‘১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর দেশে বিদ্রোহ দমনের নামে সেনা ও বিমানবাহিনীর যেসব সদস্যকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তাদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন মায়ের কান্না সেই হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তি ও পরিবারদের ন্যায়বিচারের দাবিতে ২০১৮ সাল থেকে কাজ করছে।’
লেলিন আরও বলেন ‘১৯৭৭ সালের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর হওয়া ১২১ জন, কুমিল্লায় ৭২ জন, বগুড়ায় ১৬ জন এবং রংপুরে ৭ জনের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। কিন্তু বিমানবাহিনীর হিসেবে ৫৬১ জন সৈনিক নিখোঁজ হয়েছেন, যাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি ঘটনার দিন যারা ছুটিতে ছিলেন তাদেরও ধরে এনে ফাঁসি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।’
More Stories
যারা সুষ্ঠু ভোটের পক্ষে, মার্কিন ভিসা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কারণ নেই: পিটার হাস
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার...
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিত রাখার সুপারিশ জাতিসংঘ বিশেষ দূতের
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত আইনটি স্থগিত রাখার সুপারিশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের চরম দারিদ্র্য বিষয়ক বিশেষ...
ভিসানীতি সরকারের বুকে কাঁপন ধরিয়েছে : গণতন্ত্র মঞ্চ
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বুকে কাঁপন ধরিয়েছে বলে দাবি করেছেন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা...
কোনো নিষেধাজ্ঞায় নির্বাচন বন্ধ হবে না: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোনো নিষেধাজ্ঞায় নির্বাচন বন্ধ হবে না। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা...
সরকার বাইরে গণতন্ত্র ও ভেতরে বাকশাল পদ্ধতিতে দেশ পরিচালনা করছে: জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপি বলেছেন, দেশের প্রতিটি সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন...
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পলিসি দেখে বিএনপির ঘুম হারাম : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়েছিল নিষেধাজ্ঞা, এসেছে নতুন ভিসা পলিসি। এ...