Read Time:6 Minute, 32 Second

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার গ্রেটফলসে এক নৈশভোজের মাধ্যমে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ জয়ী দুই চ্যাম্পিয়ন টিমকে উঞ্চ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ ও পিপলএনটেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপসহ ডিএমভিবাসী। দু’দলের সদস্যদের জন্য শতভাগ স্কলারশিপের ঘোষণা দিয়েছেন ডব্লিউইউএসটির চ্যান্সেলর। ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে তার বাসভবনে আয়োজন করা হয় এই নৈশভোজের।

নাসার আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছে ২০১৮ ও ২০২১ এর চ্যাম্পিয়ন দল ‘সাস্ট অলীক’এবং ‘মহাকাশ’। বর্তমানে ওয়াশিংটন ডিসিসংলগ্ন ম্যারিল্যান্ডে নাসা হেডকোয়ার্টার ভ্রমণ রয়েছেন চ্যাম্পিয়ন দল দুটি। এই ভ্রমণের ফাঁকে নিজ বাসভবনে তাঁদের আমন্ত্রণ জানান ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও ফারহানা হানিপ। তাঁদের এই আগমন উপলক্ষে নৈশভোজে উপস্থিত হয়েছিলেন গ্রেটার ওয়াশিংটনের নানা শ্রেণী-পেশার বিশিষ্টজনেরা।

ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় দুই টিমকে। চ্যাম্পিয়ন দু’দলের কাছে তাঁদের এই অর্জনের গল্প শুনতে চান সবাই। মহাকাশ বিষয়ক জটিল সব বিষয় তারা সবাইকে বুঝিয়ে বলেন। তারা জানান, মহাকাশ গবেষণায় তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিবছর ‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রতিযোগিতা আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ৪৮ ঘণ্টার এই হ্যাকাথনে নাসার দেওয়া তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন প্রতিযোগীরা। ২০১৮ সালে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় ‘বেস্ট ইউস অব ডেটা’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ‘সাস্ট অলীক’ টিম।

আর বাংলাদেশ থেকে ২০২১ সালের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কুয়েট এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির দল ‘মহাকাশ’। আর ২০২২ সালে ‘মোস্ট ইন্সপেরিশনাল’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ডায়মন্ড। এই তিন চ্যাম্পিয়নের মধ্যে ২০১৮ ও ২০২১ সালে টিম অলীক ও মহাকাশ এসেছে নাসার আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফরে। নাসায় দু’দিনের সফরের অভিজ্ঞা কেমন ছিলে তা জানান টিম অলীকের দলনেতা আবু সাদিক মাহদি এবং মহাকাশের টিম লিডার সুমিত চন্দ্র।

নাসা স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জের বাংলাদেশের পক্ষের মূল সমন্বয়ক মাহাদী উদ-জামানের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করছে দলটি। তিনিও ছিলেন এই আয়োজনে। মাহাদী জানান, বিশ্বের দেড়শে’ দেশের পাঁচ হাজারের বেশি টিমের মাঝে এই প্রতিযোগিতার শুরু থেকে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০১৮ ও ২০২১ ও ২০২২ এই তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্যিকার অর্থেই বিশাল অর্জন এবং বাংলাদেশের এই টিমগুলো পেছনে ফেলছে আমেরিকা ও ইউরোপসহ বিশ্বের বিখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার টিমকে।

২০২১ এর নাসার এই প্রতিযোগীতায় ১৬২টি দেশ থেকে ৪ হাজার ৫৩৪টি দলের প্রায় ২৮ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে জয়ী ১০ দলের মধ্যে স্থান করে নেয় বাংলাদেশের ‘মহাকাশ’। অন্যদিকে বিশ্বের ৭৯টি দেশের বাছাইকৃত ২ হাজার ৭২৯টি টিমকে পেছনে ফেলে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০১৮ প্রতিযোগিতায় ‘বেস্ট ইউজ অব ডেটা’ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ‘সাস্ট অলীক’। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ তাঁদের মেধা এবং দেশের জন্য বয়ে আনা সম্মানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি ওয়াশিংটন ইউনিভাসির্টিতে দু’দলের সদস্যদের জন্য শতভাগ স্কলারশিপের ঘোষণা দেন।

পিপএলনটেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ বলেন, ‘আকাশ যদি মানুষে স্বপ্ন পূরণের শেষ সীমা হয় তাহলে এই দু’দল ইতোমধ্যে তা জয় করে ফেলেছে। এরা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে নতুন পরিচয়ে পরিচয় করিয়েছে। প্রতিটি বাংলাদেশির জন্য এ গর্বের।’

অনুষ্ঠানে আগত বিশিষ্ট অতিথীরাও একে একে ব্যক্ত করেন তাদের অনুভূতির কথা। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পক্ষ থেকে তাদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ইন্টারপোলের রেড নোটিশে আরাভ খান
Next post অভিবাসনপ্রত্যাশী ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা চুক্তি
Close