Read Time:4 Minute, 48 Second

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, ডলার সাশ্রয় সবসময় ভালো ফল বয়ে আনে না। আর ঢালাওভাবে আতঙ্কিত হয়ে কিছু করাও যাবে না। ডলার ক্রাইসিস বলে বলে আতঙ্ক ছড়াবেন না; এই সংকট পুরো পৃথিবীজুড়েই। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ডলার সাশ্রয়ের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তাই বেড়েছে কাস্টম ডিউটি। ডিউটি বাড়ানো ছাড়া ডলার সাশ্রয়ে আমাদের আর কিছু করার নেই। আমরা আমদানি বন্ধ করতে পারব না, ডিউটি বাড়িয়ে তাদের নিরুৎসাহিত করছি।

ডলার সাশ্রয়ে সবসময় ভালো ফল আসবে না জানিয়ে তিনি বলেন, উপকরণ আমদানি ও মেশিনারিজ আমদানি বন্ধ করলে ডলার সাশ্রয় হবে। কিন্তু তাতে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, রপ্তানি কমে যাবে। তাই ডলার সাশ্রয় করতে গিয়ে ঢালাওভাবে আতঙ্কিত হয়ে কিছু করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, শুল্কহার কমানো-বাড়ানো এনবিআরের কাজ। যখন অন্য কোনো মন্ত্রণালয় থেকে আসে তখন তারা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে। আর এনবিআর যখন বিবেচনা করে তখন সার্বিক দিক বিবেচনা করে। শুল্কহার কমানো-বাড়ানোর সঙ্গে শুধু ডলার সাশ্রয়ের সম্পর্ক নয়। এর সঙ্গে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয় কি না, চোরাচালানের প্রবণতা বৃদ্ধি পায় কি না এসব বিষয়গুলোও আমাদের দেখতে হয়। এসব বিবেচনায় যেসব পণ্যের শুল্কহার বাড়ানো দরকার সেগুলো আমরা বাড়াই, প্রয়োজনে আরও বাড়াব। অনেক জিনিস অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে, কিন্তু দেখা যাবে সেগুলো আরেকটি পণ্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যে মন্দাভাব তার রেশ বাংলাদেশের বাণিজ্যেও পড়েছে। তাতে রাজস্ব আহরণও কমেছে। ভোক্তার সুবিধার্থে আমদানি পর্যায়ে কিছু অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাতেও কিছুটা আহরণ কম হয়েছে। তবে আশাকরি বছরের শেষ নাগাদ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি যেতে পারব।

গ্যাসের দামবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এনবিআর ট্যারিফ কমাতে পারতো কি না জোনতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু গ্যাসের দাম না, অন্যান্য সব ক্ষেত্রে সবাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখে ট্যাক্স, কাস্টম ডিউটি। যখনই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হয়। সবাই মনে করে ট্যাক্স, ভ্যাট, কাস্টম ডিউটি কমালেই দ্রব্যমূল্য কমে যাবে।

চীনের রাষ্ট্রদূতের একটি বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, চীন ২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে। একই সময়ে এনবিআরের রেকর্ড বলছে, বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি করেছে। অর্থাৎ ১০ বিলিয়ন ডলার শুধুমাত্র একটি দেশের সঙ্গেই পার্থক্য। হিসাবের এই পার্থক্য কেন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ের কোনো সঠিকতা বা যথার্থতা বিচার না করে আমি কোনো কথা বলবো না। এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে ডকুমেন্ট দেখে কথা বলতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা
Next post রাশিয়া বাংলাদেশকে বিপদে ফেলবে না: প্রত্যাশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
Close