জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধার মামলায় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের পক্ষে দলীয় কার্যক্রমে যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল তা বহাল রেখেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া সন্ধ্যায় এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার মো. আমিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর জাপার বহিস্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা জি এম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে অবৈধ ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন। তবে জিএম কাদের আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ৩০ অক্টোবর পার্টির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
তবে এ আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিস আপিল (নিম্ম আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ) করেন জি এম কাদেরের আইনজীবীরা। এরপর এবিষয়ে সর্বশেষ গত ৯ শুনানি শেষে আদেশের জন্য আদালত গত ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। তবে ওইদিন আদেশ না দিয়ে আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।
জিয়াউল হক মামলায় অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই জাপার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর ছয় মাস আগে ১ জানুয়ারি জিএম কাদের তার বড় ভাই এরশাদকে ভুল বুঝিয়ে ‘জাতীয় পার্টির জন্য ভবিষ্যৎ নির্দেশনা’ শিরোনামে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করান। এরপর জি এম কাদের প্রথমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, পরে চেয়ারম্যান হন, যা ছিল গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।
এ নিয়ে দলের ভেতরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে এরশাদ ২০১৯ সালের ২২ মার্চ জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেন। ৪ মে পুনরায় তাকে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেন। তখন এরশাদ গুরুতর অসুস্থ থাকায় তিনি স্বাভাবিক বিবেচনা প্রয়োগে সক্ষম ছিলেন না বলে মামলায় দাবি করা হয়। এরশাদের মৃত্যুর পর ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন জি এম কাদের। দলের গঠনতন্ত্রে এভাবে চেয়ারম্যান ঘোষণার কোনো বিধান নেই।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, জিএম কাদের নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান দাবি করে ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলন ডাকেন। এর কিছুদিন আগে ১৯ ডিসেম্বর এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে জি এম কাদেরকে চেয়ারম্যান ঘোষণা কেন বেআইনি হবে না, মর্মে রুল দেন হাইকোর্ট। এটি বিচারাধীন অবস্থায় দলের কাউন্সিল করেন জিএম কাদের। এরপর তিনি পার্টির চেয়ারম্যান হন। রুল থাকা অবস্থা জি এম কাদেরের পার্টির চেয়ারম্যান হওয়া কেন অবৈধ নয় অভিযোগ করা হয় মামলায়।
এছাড়া, একই অভিযোগে জাপার সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা গত ২৩ অক্টোবর জি এম কাদেরকে চেয়ারম্যান হিসেবে বেআইনি ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে আরেকটি মামলা করেন।
এদিকে, এই মামলা দুটি খারিজের জন্য আবেদন করেছেন জি এম কাদেরের আইনজীবীরা। এবিষয়ে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হকের আদালতে উভয়পক্ষের শুনানি হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশে জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
More Stories
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা জনতার দাবি: সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কেউ কেউ আওয়ামী লীগকে ঐতিহ্যবাহী দল বলে দাবি করেন। কিন্তু তাদের ঐতিহ্য হলো...
আওয়ামী লীগের জরুরি ঘোষণা
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি জরুরি ঘোষণা দিয়েছে। রোববার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ৬টার দিকে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।...
সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামার পরিকল্পনা আ. লীগের
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে শিগগিরই রাজপথে আন্দোলন শুরু করতে পারে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার...
সবাইকে বিভেদ ভুলে কাজ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতি গঠনের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, এই সুযোগ নষ্ট হলে বাংলাদেশ অনেক...
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় জামায়াতে ইসলামী
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায় জামায়াতে ইসলামী- এমনটাই মন্তব্য করেছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, জামায়াতে...
‘রাষ্ট্রপতি বিতর্ক নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাতে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ’
রাষ্ট্রপতি বিতর্ক নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাতে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। বিএনপির নেতাদের...