প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিরা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সর্বদা তৎপর।
তিনি বলেন, আমাদের সবার মনে রাখা উচিত বাংলাদেশ আমাদের দেশ। আমরা দেশের স্বাধীনতা এনেছি। কিন্তু, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সর্বদা তৎপর রয়েছে।
টানা দশমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর রোববার গণভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। খবর বাসসের
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৯ বছরে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৯ পর্যন্ত দুই দফায় ক্ষমতায় থাকা সরকারগুলো দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। জনগণও মর্যাদা লাভ করেছে। এর কারণ ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তিনবার ক্ষমতায় রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের একটি মাত্র সিদ্ধান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সমর্থনকারী সাধারণ মানুষ আমাদের ক্ষমতার সবচেয়ে বড় উৎস। তাই প্রতিটি নেতাকর্মীকে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া দেশকে ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশ থেকে মঙ্গা ও দুর্ভিক্ষ চলে যায়। তিনি বলেন, আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়ে ওঠা একটি সংগঠন এবং বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সংগঠনের জন্ম হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, এটা মাথায় রেখেই দলকে শক্তিশালী করতে হবে।
এসময় আওয়ামী লীগের বিত্তশালী ব্যক্তিদের নিজ নিজ এলাকায় দলের নিবেদিতপ্রাণ ও অসচ্ছল কর্মীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে অনেক অসচ্ছল নেতাকর্মী আছেন, যারা পৈতৃক জমি বিক্রি করেও রাজনীতি করেন। কিন্তু কখনো কিছু চাননি।
শেখ হাসিনা বলেন, আইয়ুব খান, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়াসহ অনেকেই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিপুল সংখ্যক নিবেদিতপ্রাণ কর্মী থাকায় তারা তা করতে পারেননি।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রসঙ্গে তিনি জানান, তার সরকার অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে এবং উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে ও বাস্তবায়নে কঠোর সংযম বজায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা খুব প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা দ্রুত প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন সম্পন্ন করছি যা জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।
সরকারপ্রধান বলেন, এখন সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। এর পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি জনগোষ্ঠী একটি স্মার্ট জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে।
তিনি আরো বলেন, সবাই কম্পিউটার এবং অনলাইন ব্যবহারে দক্ষ হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও কৃষিসহ প্রতিটি খাতে স্মার্ট এবং ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে।
এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দশমবারের মতো দলীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
More Stories
‘গুলি-গ্রেনেডের ভয়ে পালাবে না, এমন সাহসী নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে’
মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে মির্জা ফখরুল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গুলি-গ্রেনেডের ভয়ে যারা...
ভারতীয় মশলা-পেঁয়াজ কার ঘরে নাই, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন তুলেছেন, ভারতীয় মশলা ও পেঁয়াজ কার...
দেশি পণ্য কিনতে বলায় আওয়ামী লীগের গা জ্বালা শুরু হয়েছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভারতীয় পণ্যবর্জ করে স্বদেশি পণ্য কিনতে বলায় আওয়ামী লীগের গা জ্বালা শুরু...
দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটা...
শান্তিপূর্ণ ও অসহিংস আন্দোলন চলবে : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করি, যার মধ্য...
‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ না বলায় অধ্যক্ষের কক্ষে ছাত্রলীগের তালা
‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ না বলায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের একটি কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রোববার (২৪ মার্চ)...