Read Time:5 Minute, 54 Second

‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দিতে গেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাদের কথা না শুনে এড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় সমালোচনা করেছেন দেশের বিশিষ্ট ৩৪ নাগরিক।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের রাজধানীর শাহীনবাগের বাসায় যান। সে সময় তিনি বেরিয়ে আসার পর ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দিতে গেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাদের কথা না শুনে এড়িয়ে যান বলে দাবি করেন তারা।

পিটার হাসের এ আচরণকে বিশিষ্টজনেরা কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বর্হিভূত আচরণ হিসেবে দেখছেন, যা কিনা ভিয়েনা কনভেনশনের (১৯৬১) পরিপন্থী। একই সঙ্গে তার এ ধরনের আচরণ কূটনৈতিক দায়িত্বের পর্যায়ে ফেলা যায় কিনা, নাকি এর মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরাসরি জড়িয়ে পড়লেন এবং বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষভুক্ত হলেন কিনা, এ নিয়ে দেশের জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সেনাবিদ্রোহ দমনের নামে শতশত সেনা সদস্যদের বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর থেকে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে ১১০০ থেকে ১৪০০ জন সেনা সদস্যকে কারাগারের অভ্যন্তরে গণহারে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। সে হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে সেসব শহীদ পরিবারের সদস্যরা সংগঠিত হয়েছেন ‘মায়েরকান্না’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে। বিবৃতিতে বলা হয়, গত বুধবার পিটার হাস তাদের কাছ থেকে স্মারক লিপি গ্রহণ করলে, কেউ তাকে পক্ষপাতপূর্ণ আচরণের দায়ে অভিযুক্ত করতে পারতেন না। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এ ধরনের শিষ্টাচারবর্হিভূত পক্ষপাতমূলক আচরণের তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি এটাকে দুঃখজনক ও অনিভিপ্রেত বলে উল্লেখ করেন বিশিষ্ট এই নাগরিকরা।

বিবৃতিতে সই করেছেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, দেশবরেণ্য চিত্র শিল্পী অধ্যাপক ড. রফিকুন নবী রনবী, অধ্যাপক ড. হাশেম খান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হোসেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. অহিদুজ্জামান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ এ মামুন, অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল বায়েস, অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদার, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কবি ও সাহিত্যিক অধ্যাপক চৌধুরী জুলফিকার মতিন, একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও নাট্যব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল খালেক, দেশবরেণ্য অভিনেত্রী অরুনা বিশ্বাস।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী : পঁচাত্তরের হায়েনাদের বংশধরেরা এখনও সক্রিয়
Next post কূটনীতিকদেরও চাপে রাখতে চাইছে সরকার: আমির খসরু
Close