Read Time:5 Minute, 21 Second

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি সংকটে দিন পার করছে ইউরোপের দেশগুলো। গ্রিসে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। দিন দিন বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। যার প্রভাবে হিমশিম খাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যারা পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তাদের অবস্থা নাজেহাল।

সম্প্রতি জেনারেল কনফেডারেশন অফ গ্রিক ওয়ার্কার্সের শ্রম ইনস্টিটিউটের (আইএনই/জিএসইই) নতুন অর্থনৈতিক উন্নয়ন বুলেটিনে, ‘হেলাসে জীবনযাত্রার সংকট’ শিরোনামের এক গ্রিসে শ্রমিকদের ক্রয় ক্ষমতা ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জ্বালানি এবং পণ্যের দামের তীব্র বৃদ্ধি কর্মীদের ক্রয়ক্ষমতা এবং তাদের জীবনযাত্রার মানকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে। প্রধানত জ্বালানি ও খাদ্যের মতো মৌলিক জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে এমন পরিস্থির মুখোমুখি তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের মাসিক আয় ৭৫০ ইউরোর কম, তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে ৪০ শতাংশ। প্রতি মাসে ১১০০ ইউরো গড় আয়ের পরিবারের ক্রয়-ক্ষমতা কমেছে ৯ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশ। ব্যতিক্রম হলো দেশটিতে যারা ৩৫০০ ইউরোর ওপরে মাসিক আয় তাদের ক্রয় ক্ষমতা খুব একটা কমেনি।

ইউরোপের এই দেশটিতে বসবাস করেন প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি। এদের মধ্যে সিংহভাগই অবৈধ। করোনা মহামারির ধাক্কা সামাল দেওয়ার পর এবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দ্রব্যমূল্যের বাজারের বেসামাল পরিস্থিতি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ও কর্মহীন মানুষরা। বৈধভাবে চলাচলের কাগজপত্র না থাকায় অনেকেই পুলিশি হয়রানির কারণে কাজ করতে পারছেন না। ফলে বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেক বাংলাদেশি।

জিনিসপত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছিল মূলত করোনাভাইরাস মহামারির সময়। তখন থেকেই জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এবার চলতি বছর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তেল-গ্যাসসহ সকল পণ্যের বাজারে যেন আগুন লেগেছে।

ব্যবসায়ী রুবেল আহমদ বলেন, ‌‘আমরা যারা স্বপরিবারে গ্রিসে আছি তাদের অবস্থাও ভালো নেই। বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল আর বাজার খরচ মিলিয়ে এখন ছোটখাটো ব্যবসা বা চাকরি করে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ দুর্বিষহ ব্যাপার। বাচ্চাদের পড়া লেখার খরচসহ সব কিছুই ঊর্ধ্বগতি।’

বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সহ-সভাপতি শাহনূর রিপন জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে ভোজ্যতেল থেকে পশুখাদ্যসহ সবকিছুর দামই বাড়ছে। যারা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আছেন তারা হয়তো এতটা খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েননি। কিন্তু যারা নিম্ন আয়ের বা কর্মহীন তারা পড়েছেন বেকায়দায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যে চালের বস্তার মূল্য ছিল ৪৫ ইউরো তা বর্তমানে ৫৫ ইউরো, গ্যাস ছিল ১৫ ইউরো তা এখন ১৯ থেকে ২০ ইউরো। ৫ লিটার তেলের মূল্য ছিল ৭ ইউরো এখন ১১ থেকে ১২ ইউরো।

এদিকে জেনারেল কনফেডারেশন অফ গ্রিক ওয়ার্কার্সের শ্রম ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্বল্প আয়ের ওপর উচ্চ ব্যয়ের অসম প্রভাবের কারণে আংশিকভাবে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ক্রয় ক্ষমতা হ্রাসের একটি অতিরিক্ত নেতিবাচক প্রভাব ভোগ এবং বৃদ্ধির গতিশীলতাকে উদ্বিগ্ন করেছে। এ ছাড়া সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের কিছু বিষয়ও তুলে ধরা হয়। যার লক্ষ্য কর্মচারীদের ক্রয় ক্ষমতা এবং সবচেয়ে দুর্বল সামাজিক গোষ্ঠীগুলোকে রক্ষা করা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৫ কারা কর্মকর্তাকে বদলি
Next post যুক্তরাষ্ট্রে গভর্নরস সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড পেলেন রেবেকা ইসলাম
Close