তিন নন্দ ঘোষের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে সরকার রেহাই পেতে চাচ্ছে দাবি করে বিএনপি দলীয় সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘একটি নন্দ ঘোষ হচ্ছে করোনা, আরেকটি হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আরেকটি হচ্ছে বিশ্বমন্দা। যাই হোক না কেন, যে অবস্থায় দাঁড়াক না কেন, সরকার সমস্ত দোষ চাপাচ্ছে এই তিন নন্দ ঘোষের হাতে।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন রুমিন ফারহানা। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
রুমিন ফারহানা বলেন, ‘২০০৯ সালে এই সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে মেয়াদের পর মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে। এভাবে ক্ষমতায় থাকতে গোষ্ঠিতন্ত্র কায়েম করতে হয়। তাদের খুশি রাখতে আইন প্রণয়ন করতে হয়। তাদের সুবিধার্থে নিয়মকানুন করতে হয়। তাদেরকে পালতে ও পুষতে হয়।’
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাব সারাবিশ্বের উপর পড়েছে বলে উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এতে যদি চরম অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়। তাহলে সরকারের হিসাবে আমাদের চাইতে কম মাথাপিছু আয়ের দেশ ভারত, নেপাল ও আফ্রিকার অনেক গরীব দেশকে বিবিসি কেন শ্রীলঙ্কা হবার তালিকায় রাখেনি। গত একযুগে যে লুটপাট হয়েছে, অনিবার্য তা হবার কথা।’
কুইক রেন্টাল দায়মুক্তির সমালোচনা করেন রুমিন। এছাড়াও অবকাঠামো উন্নয়নে দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘যেখানে লুটপাট হয়, সেখানে টাকা পাচার স্বাভাবিক। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করব না প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী এমন বক্তব্য দেওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ জানান রুমিন ফারহানা। রুমিন বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি কি অবস্থায় আছে সেটা তাঁর (তৌফিক-ই-ইলাহি) চেয়ে আর বেশি ভালো কেউ জানে না। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যাচ্ছে সেটা টের পাচ্ছি অক্টোবরের এই শীত শীত সময়ে শুক্রবারের মত ছুটির দিনে দুই থেকে তিনবার লোডশেডিং হচ্ছে ঢাকায়।’
আগামী বছর বিশ্বে দুর্ভিক্ষ হবে এমন আশঙ্কা করে প্রতি ইঞ্চি জমিতে চাষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অনুরোধ করেছেন তার সমালোচনা করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সাধারণভাবে ভাবতে গেলে মনে হবে প্রধানমন্ত্রীর এই ধরণের বক্তব্য কৌশলগতভাবে ভুল। যখন তাঁর পক্ষ থেকে এ ধরণের বার্তা আসে তখন আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।’
অর্থনীতিতে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার চেয়ে ভয়াবহ আর কিছুই নেই বলে দাবি করেন তিনি। এতে মানুষ খরচ করা কমিয়ে দেবে এবং অর্থনৈতিক চাকা স্থবির হয়ে পড়বে বলে উল্লেখ করেন রুমিন। তিনি বলেন, ‘যখন কেউ ব্যয় করে, তখন আরেক জনের উপার্জন হয়। এই পরিস্থিতির পর প্রধানমন্ত্রী বারংবার মানুষকে দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করছেন। তখন আমাদের বুঝতে হবে পরিস্থিতি আসলেই খারাপ।’
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...