Read Time:5 Minute, 26 Second

বর্ণাঢ্য কর্মজীবন শেষে আজ শুক্রবার অবসরে গেলেন বাংলাদেশ পুলিশের বিদায়ী মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। আইজিপির দায়িত্ব হস্তান্তরের পর আজ বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে বিদায়ী আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়। এসময় একটি সুসজ্জিত পুলিশ দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। আর ড. বেনজীর তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেন।

পরে বিদায়ী আইজিপি দৃষ্টিনন্দনভাবে বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে বিশেষভাবে সাজানো আইজিপির সুসজ্জিত গাড়িতে আরোহন করেন। বাংলাদেশ পুলিশের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও রীতি অনুযায়ী সুসজ্জিত গাড়ির সঙ্গে বাঁধা রশি টেনে আইজিপিকে বিদায় জানানো হয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সব পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য এবং সিভিল স্টাফরা দুই পাশে রশি ধরে টেনে গাড়িটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আউট গেট পর্যন্ত নিয়ে আসেন। সেখান থেকে বিদায়ী আইজিপির গাড়ি অশ্বারোহী ও মোটর শোভাযাত্রাসহ মিন্টো রোডের পুলিশ ভবনে পৌঁছে দেওয়া হয়।

বর্ণীল কর্মজীবনের অধিকারী ড. বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করে বিভিন্ন পর্যায়ে সুদীর্ঘ ৩৪ বছর ৭ মাস দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি তার ২৮ মাসের কর্মকালে বাংলাদেশ পুলিশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘ভিশন-২০৪১’ সালের উন্নত দেশের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন।

ড. বেনজীর আহমেদ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় পুরো দেশ করোনা মহামারির ভয়াল থাবায় অচল হয়ে পড়ে। তিনি করোনা প্রতিরোধে সম্মুখযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের মানসম্মত চিকিৎসার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর ও একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করেন। তার নেতৃত্বে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ তাদেরকে মানবিক সহায়তা প্রদান করে।

আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, অপেশাদার আচরণ বন্ধ করা, বিট পুলিশিং এবং পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ এ পাঁচ নীতি ঘোষণা করেন ড. বেনজীর। পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করেন তিনি।

এ ছাড়া ড. বেনজীর আহমেদ পুলিশের বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজন, পুলিশ কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন, পুলিশ কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত বছরে কমপক্ষে একবার বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ম্যানুয়েল, গাইডলাইন ও এসওপি তৈরি, নারীদের জন্য নিরাপদ সাইবার স্পেস ‘সাইবার সাপোর্ট পর উইমেন ফেসবুক পেজ’, পুলিশের নিজস্ব নিউজ পোর্টাল ‘পুলিশ নিউজ’ ইত্যাদি চালু করেন।

পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে ড. বেনজীর সব বিভাগে আন্তর্জাতিক মানের স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালের আধুনিকায়ন করেন। তার হাত ধরে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে বেশ কিছু নতুন প্রতিষ্ঠান চালু হয়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সৌদিতে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন করল মক্কা আওয়ামী ফাউন্ডেশন
Next post নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন বাংলাদেশি চিকিৎসক
Close