গত ২ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে ১০ লাখের বেশি অবৈধ অভিবাসী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর গত প্রায় ২১ মাসে ১০ লাখের অধিক অবৈধ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করেছে।
সীমান্তে তালিকাভূক্ত অভিবাসী ছাড়াও বর্ডার পেট্টল এজেন্টদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে আসার ইমিগ্রান্ট এবং আন্তর্জাতিক মানবপাচার গ্যাং এর সহায়তায় মেক্সিকো থেকে মালবাহী ট্রেলার ট্রাকে কত অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করেছে তাদের সংখ্যা যোগ করলে অবৈধ ইমিগ্রান্ট সংখ্যা আরো বেশি হবে।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রথম মেয়াদকালে বলা হতো যে যুক্তরাষ্ট্রে আনডাকুমেন্টেড বা অবৈধ অভিবাসী সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ। তার দ্বিতীয় মেয়াদে এ সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেয়াদে অভিবাসী প্রবেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা সত্ত্বেও অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে ট্রাম্পের চার বছরে কমবেশি ২০ লাখ বিদেশি যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করেছে। এর বাইরে রয়েছে ‘ডাকা’ কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৭ লাখ অভিবাসী। ‘টিপিএস’ বা টেম্পোরারি প্রটেকটেড স্ট্যাটাসের আওতায় রয়েছে আরও প্রায় ৫ লাখ বিদেশি। যাদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে বহু বছর যাবত। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি অবৈধ ইমিগ্রান্ট বসবাস করছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের মধ্যে প্রায় দশ লাখ এসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে। এসাইলাম অফিস থেকে যাদের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে তাদের বিষয় পুন:বিবেচনার জন্য ইমিগ্রেশন জজদের কাছে পাঠানো হয় এবং ইমিগ্রেশন আদালতগুলোতে প্রায় ছয় লাখ এসাইলাম কেস বিবেচনাধীন রয়েছে। লোকবলের ঘাটতির কারণে এসাইলাম অফিস ও ইমিগ্রেশন আদালতগুলোতে অনিস্পন্ন এসাইলাম কেস ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। আট-দশ বছর যাবত আটকে থাকা কেস অসংখ্য। ২০১৪ বা ২০১৫ সালে এসাইলাম আবেদন করেছেন এমন বহু এসাইলাম প্রার্থীর আজ পর্যন্ত ইন্টারভিউ হয়নি। এ ধরনের আবেদনকারীদের একটি বড় অংশ পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তাদের ইমিগ্রেশন আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে তারা যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েও যেতে পারছেন না। এধরনের আবেদনকারীর মধ্যে ১৫০টি দেশের এসাইলাম প্রার্থী রয়েছেন বলে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও ইমিগ্রেশন আদালতের দলিলের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
যারা সীমান্তে তালিকাভূক্ত হয়েছেন, তারা সীমান্তেই ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা কাগজপত্রে এসাইলামের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সিটিতে চলে এসেছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্রয়, খাদ্য ও হাত খরচের ব্যবস্থা করছে। কিন্তু এটা নিতান্তই সাময়িক ব্যবস্থা। নিউইয়র্ক সিটি, ওয়াশিংটন ডিসি, অরিগেনের পোর্টল্যান্ড সিটির নবাগত অভিবাসী আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ঘুরে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন যে অভিবাসীদের চাপে তারা হিমশিম খাচ্ছে।
More Stories
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে কাজ করবে ভারতীয় আমেরিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালাবে ভারতীয় আমেরিকানরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে...
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। শুক্রবার...
হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ট্রাম্প ২১০, কমলা ১১৩
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কে জয় পেতে যাচ্ছেন, এমন পূর্বাভাসও আসছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে। অ্যাসোসিয়েটেড...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস
ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর ধীরে ধীরে ফলাফল আসতে শুরু করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো...
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের
রাশিয়াসহ ‘প্রতিপক্ষ’ দেশগুলো বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের দাবি, তারা নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা...