হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান করেছে দুই দেশ এবং আমরা আশা করি, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ সকল অমীমাংসিত সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।
মঙ্গলবার হায়দরাবাদ হাউসে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী এই আশা প্রকাশ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি নরেন্দ্র মোদিজির দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করি। যা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও গতিশীল করেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নিকটতম প্রতিবেশী ভারত। ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল হিসেবে পরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘আজ প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং আমি আরেক দফার ফলপ্রসূ আলোচনা শেষ করেছি। যার ফলাফল উভয় দেশের জনগণের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। আমরা ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে বৈঠক করেছি।’
এর আগে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। যৌথ বিবৃতিতে মোদি বলেন, বাংলাদেশ আজ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার এবং এই অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। জনগণের সহযোগিতায় (সম্পর্কের) ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ ও পারমাণবিক খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নিয়েও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।’
মোদি বলেন, ‘আমরা বন্যা প্রশমনে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের সাথে বন্যা সংক্রান্ত রিয়েল-টাইম ডেটা শেয়ার করছি এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়েও আলোচনা করেছি। এটা অপরিহার্য, কারণ আমরা একসাথে সেইসব শক্তির মোকাবেলা করি যেগুলো আমাদের প্রতিপক্ষ।’
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেছি। করোনা মহামারি এবং সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৪টি নদী প্রবাহিত হয় এবং উভয় দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে এসব নদী যুক্ত। আজ, আমরা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।’
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে হায়দ্রাবাদ হাউসে উভয় নেতার বৈঠক শেষ হয়। পরে তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মাঝে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
More Stories
বাংলাদেশিদের বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি বিজেপি সভাপতির
ভারতের ঝাড়খণ্ড থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিদিয়েছেন দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডা। গতকাল শনিবার ঝাড়খণ্ডের পালামৌতে...
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী : ভারত সরকারের মুখপাত্র
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ভারত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করে। বৃহস্পতিবার (৭...
আবারো বাংলাদেশিদের নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য মোদির
ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টি রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে...
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে যা বললো ভারত
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আছেন, না কি অন্য দেশে চলে গেছেন, তা নিয়ে কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছে। বাংলাদেশের...
ভারতে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তিকারী পুরোহিত ‘আটক’
মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ভারতে ইয়াতি নরসিংহানন্দ নামের এক হিন্দু পুরোহিতকে আটক করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান...
মোদির ভাষণে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গ, উঠছে ‘অজস্র’ প্রশ্ন
ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে নির্বাচনের আগে বারবার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসছে বিজেপি। বুধবার (২ অক্টোবর) স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও...