গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের ক্যাথলিক গির্জায় কমপক্ষে ৬১০ জন অপ্রাপ্ত বয়স্কের যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার তথ্য। ধর্মযাজকদের যৌন লালসার শিকার প্রাপ্ত বয়স্কদেরও বিবেচনায় নিলে সংখ্যাটা ৬ হাজার ছাড়াবে।
জার্মানিতে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের গির্জায় যৌন নিপীড়নের ঘটনার তথ্য চলতি বছর প্রথম খবরে আসে জানুয়ারি মাসে। তখন জানা গিয়েছিল মিউনিখ এলাকার গির্জাগুলোতে অতীতে বহু যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে এবং গির্জা কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি না দিয়ে বরং সত্য চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।
সাবেক পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের বিরুদ্ধেও রয়েছে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত মিউনিখ এবং ফ্রাইজিং অঞ্চলে আর্চবিশপের দায়িত্ব পালন করা পোপ বেনেডিক্ট অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এর আগে ২০১৮ সালের আরেক গবেষণায় জানা যায়, ১৯৪৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্যাথলিক গির্জায় কমপক্ষে ১৬০০ ধর্মযাজক শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন। মোট তিন হাজার ছয়শ শিশুর যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার তথ্য বেরিয়ে এসেছিল চার বছর আগের সেই গবেষণায়।
সোমবার প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ম্যুনস্টারের বিশপের এলাকায় আগে যেমনটি আশঙ্কা করা হয়েছিল যৌন হয়রানি বা যৌন নিপীড়নের ব্যাপকতা তার চেয়ে অনেক বেশি। গবেষণাটি করেছেন মিউনিখ বিশ্ববিদল্যালয়ের গবেষকরা। ১৯৪৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৭৫ বছরের তথ্য সংগ্রহ এবং যাচাই করতে মোট দুই বছর সময় নিয়েছেন গবেষকরা।
টানা দু বছরের গবেষণা শেষে তারা নিশ্চিত, ওই ৭৫ বছরে জার্মানির ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের উপাসনালয়ে মোট কমপক্ষে ১৯৬ জন যৌননিপীড়ক ধর্মযাজক ছিলেন, তাদের লালসার শিকার হয়েছে কমপক্ষে ৫০০০ থেকে ৬০০০ শিশু। যৌননিপীড়িতদের তিন চতুর্থাংশই ছিল ছেলে শিশু।গবেষণা আরো বলছে, যৌন নিপীড়নের শিকার পাঁচ থেকে ছয় হাজার শিশুর মধ্যে অধিকাংশেরই বয়স ১০ থেকে ১৪-র মধ্যে।
গির্জা কর্তৃপক্ষ যে যৌন নিপীড়ক ধর্মযাজকদের বিচারের আওতায় আনতে কখনো তৎপর ছিলেন না তা সদ্য প্রকাশিক গবেষণাপত্রের বর্ণনাতেও উঠে এসেছে।মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, গির্জা কর্তৃপক্ষ যৌন নিপীড়কদের কঠোর শাস্তি দেয়া তো দূরের কথা, তাদের বদলিও করেনি।
গবেষকরা মনে করেন, যোগ্য নেতৃত্বের ভয়াবহ সংকটের কারণেই ধর্মালয়ে যৌন নিপীড়নের সব ঘটনাই প্রকারান্তরে চাপা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। ১৯৪৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ম্যুনস্টারের বিশপ এলাকার নেতৃত্বে ছিলেন মিশায়েল কেলার, ইয়োসেফ হ্যোফনার, হাইনরিশ টেনহুমবার্গ এবং রাইনাড লেটমান। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই যৌননিপীড়কদের বিচারের আওতায় না নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
More Stories
পেন্টাগন থেকে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথি ফাঁস
ইসরায়েলে ১ অক্টোবর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথির সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও...
হামাসপ্রধান সিনওয়ার নিহতের গুঞ্জন, খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে...
বাংলাদেশিসহ সব শান্তিরক্ষীকে সরিয়ে নিতে বললেন নেতানিয়াহু
লেবাননে শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্বরত সব সেনাকে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রোববার...
ইয়েমেনে সম্মিলিত বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
ইয়েমেনের হোদেইদাহ বিমানবন্দর, সানা এবং ধামার সিটিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত টেলিভিশন চ্যালেন...
মুসলিমদের শত্রু এক: খামেনি
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, আমরা যদি এক হতে পারি...
ইসরাইলকে আরও কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল যদি ‘সর্বনিম্ন ভুল’ করে তাহলে তেহরান নিশ্চিতভাবে আরও ‘শক্তিশালী এবং কঠোর প্রতিক্রিয়া’...