Read Time:3 Minute, 56 Second

ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরে রবিউল আলম সোহেল (৪৫) নামে এক প্রবাসী দেখেন, তার স্ত্রীর নামে বিভিন্ন এনজিওতে অর্ধকোটিরও বেশি টাকার ঋণ আছে। স্ত্রীর ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

ভুক্তভোগী রবিউল আলম সোহেল কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার সোনাইসার গ্রামের বাসিন্দা। জীবনে যত আয় করেছেন, সবই তুলে দিয়েছেন স্ত্রীর হাতে।

সাত বছরের প্রবাস জীবন শেষে গত জানুয়ারিতে দেশে ফিরে জানতে পারেন, স্ত্রীর নামে স্থানীয় ৭টি এনজিওতে ৬৮ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে।

সোহেল বলেন, ‘এই ঋণ পরিশোধ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। রেমিটেন্স ঋণ দিলে অবশ্যই প্রবাসে অবস্থানরত ব্যক্তির সাথে কথা বলতে হবে এনজিওগুলোর। তা না করে আমার স্ত্রীকে তারা কীভাবে ঋণ দিলো।’

‘সাত বছর পর দেশে এসে আমি নিঃস্ব। আমি জানি আমার স্ত্রী অপরাধী। কিন্তু এনজিওগুলো কীভাবে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আমার স্ত্রীকে ঋণ দিলো। এখানে অবশ্যই তারা বেনিফিটেড হয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সাথে সূক্ষ্ম প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ দিয়েছে এনজিও কর্মীরা।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিউল আলমের স্ত্রী মারিয়া আফরিন মোট ৬৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। বাকি আছে ২২ লাখ টাকা।

মারিয়া আফরিনের স্বামী বলেন, ‘আমি বাড়ি এসে একটি ফোন কলের সূত্র ধরে জানতে পারি, আমার স্ত্রী আমার অগোচরে বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো, আমার অবর্তমানে আমার স্ত্রীকে কীভাবে তারা এতো টাকা ঋণ দিলো। এখানে এনজিওর ফিল্ড ম্যানেজাররা অবৈধ সুযোগ গ্রহণ করেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত সাত বছর ফ্রান্সে থেকে যে আয় করেছি তা দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছি। এখনো কাজ শেষ হয়নি। এই মুহূর্তে বাড়ি এসে ঋণের কথা শুনে আমি দিশেহারা। আমার এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। স্ত্রীকে ঋণের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, সে বলে এ ঘটনায় সে আত্মহত্যা করবে। আমি এখন কি করবো?’

এদিকে এনজিওগুলোর মধ্যে গাকের ফিল্ড অফিসার রিপন জানান, তিনি মারিয়া আফরিনের মোবাইল ফোনে তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেই ঋণ দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ফোনের ওই পাশে কে ছিল তা তিনি নিশ্চিত নন।

একই কথা বলেন এসএসএস এর ফিল্ড অফিসার বিপ্লব ভদ্র। তিনি বলেন, ‘এসএসএস থেকে মারিয়া এখন পর্যন্ত পাঁচ বার ঋণ নিয়েছেন। প্রতিবারই ঋণ দেয়ার সময় যতটুকু কাগজপত্র রাখা দরকার। আমরা রেখেছি।’

সিসিডিএ ভরাসার শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাউছার আলম বলেন, ‘মারিয়ার স্বামী ফোনে বলেছেন, তার শ্বশুর সব জানে। মারিয়াকে ঋণ দিলে কোনো সমস্যা নেই। আমরা নিয়ম মেনেই ঋণ দিয়েছি।’

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ভ্যানচালককে বেত্রাঘাত করলেন সিলেটের মেয়র আরিফ, নিন্দার ঝড়
Next post ওয়াশিংটনে বন্দুক হামলায় নিহত ৪
Close