যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রবিবার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন করেছে পাকিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন। হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। এ উপলক্ষে দূতালয় প্রাঙ্গণ ব্যানার ও পোস্টারে সুসজ্জিত করা হয়।
সকালে দূতালয় প্রাঙ্গণে হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উপস্থিতিতে পাকিস্তানে নিযুক্ত হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের পর হাইকমিশনার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। হাইকমিশনার তার বক্তৃতায় মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব ও ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তদানীন্তন মেহেরপুর মহাকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদিত হয়। মুজিবনগর সরকার গঠনের ফলে বিশ্ববাসী স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামরত বাঙালিদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে। জনমত সৃষ্টি, শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনা ও যুদ্ধের রণকৌশল নির্ধারণে মুজিবনগর সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে তা বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এক অনন্য গৌরবগাঁথায় স্বাক্ষর হয়ে রয়েছে।
হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের তাঁর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে সফলভাবে ৫ বছর দেশ পরিচালনা করেন।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠনের পর বর্তমান সরকার মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশে নামিয়ে নিয়ে এসেছে। নারীর ক্ষমতায়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সকল শর্ত পূরণ করেছে এবং ২০২৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করেছে এবং তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। হাইকমিশনার মুজিবনগর দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেনতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যার যার অবস্থানে থেকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
সবশেষে জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।
More Stories
লস এঞ্জেলেসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপন
লস এঞ্জেলেসস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপন করে।...
মালয়েশিয়ায় সরাসরি পাসপোর্ট পেলেন দেড় হাজার প্রবাসী
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে সরাসরি পাসপোর্ট পেলেন দেড় হাজার প্রবাসী। শনি ও রোববার দেশটির ছুটির দিনে হাইকমিশনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় প্রবাসী...
নিলামে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পেইন্টিং সোয়া চার কোটি টাকায় বিক্রি
সম্প্রতি নিউইয়র্কে এক নিলামে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুটি পেইন্টিং বা চিত্রকর্ম রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ‘সাঁওতাল দম্পতি’ চিত্রকর্মটি...
এমভি আবদুল্লাহ: আন্তর্জাতিক অভিযান বন্ধে নাবিকদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে জলদস্যুরা
ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে জলদস্যুদের ওপর যৌথভাবে চাপ বাড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতীয় নৌবাহিনী।...
ব্রিটিশ বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তোলার আহ্বান
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্রিটিশ বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক ও মানবিকতার মূল্যবোধের আদর্শে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন।...
জিম্মি জাহাজের ওপর নজর রাখছে ‘অপারেশন আটলান্টা
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র ওপর একটি ইউরোপীয় জাহাজ থেকে নজর রাখার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল...