Read Time:5 Minute, 38 Second

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করছে পুরো বাঙালি জাতি। ফুলেল শ্রদ্ধায় শোভিত হয় শহীদ বেদী।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা সকলের চোখে-মুখে ছিল ষড়যন্ত্র আর চক্রান্তের বেড়াজাল ছিন্ন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়ার দৃপ্ত শপথ। হাতে লাল-সবুজের পতাকা আর বুকে ছিল বিজয়ের ইস্পাতদৃঢ় মনোবল।
সকালে দিনের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী পরিষদ, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। তাদের শ্রদ্ধা জানানোর পরপরই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল ফটক।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল ফটক খূলে দেয়ার সাথে সাথে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। এসময় রাজনৈতিক দলের নেতারা জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল বেদীতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। তারা চলে যাওয়ার পরপরই জাতীয় স্মৃতিসৌধে ছুটে আসেন বিভিন্ন বয়সীরা। ছুটে আসেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সাধারণ মানুষ। জাতীয় স্মৃতিসৌধ চত্ত্বর এসময় সাধারণ মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ ৭১, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপ্টোার্স ইউনিটি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর বিভিন্ন হলসমূহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর বিভিন্ন হলসমূহ, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাসদ, বিএলআরআই, গণবিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাপ, বিভিন্ন সরকারী ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, গণতন্ত্রী পার্টি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু সংসদ, মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিসহ সরকারী-আধাসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
হানাহানিমুক্ত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার প্রত্যয়ে লাল-সবুজের পতাকার রঙে পাঞ্জাবী আর শাড়ী পড়ে সাধারণ মানুষ স্মৃতিসৌধে আসেন। এমন দৃশ্য ছিল সর্বত্র। হাত-মুখসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে জাতীয় পতাকা আকেঁ শিশু-কিশোররা। অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়েই ছুটে আসেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণের নিরাপত্তার স্বার্থে স্মৃতিসৌধ ও এর আশেপাশে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও তারা বিভিন্ন স্থাপনা ও সড়ক-মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে নজরদাবী বৃদ্ধি করেন। ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকাকে নজরদারীর আওতায় নিয়ে আসা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নজিরবিহীন তৎপরতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়েই বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান লাখো জনতা।
ঢাকা জেলা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন দফতরের সমন্বিত অংশগ্রহণে স্মৃতিসৌধ ও এর আশেপাশের এলাকাসহ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঢেকে ফেলা হয় নিরাপত্তার চাদরে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post একাত্তরের জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Next post সিডনিতে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ফুটবল ম্যাচ
Close