Read Time:5 Minute, 53 Second

ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে রাশিয়াকে থামাতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র। সরাসরি যুদ্ধেও জড়াতে রাজি নয় দেশটি। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, এর অর্থ হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পৃথিবীকে ঠেলে দেয়া। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞাই বড় অস্ত্র। অবশেষে রাশিয়াকে চরম শিক্ষা দিতে দেশটি থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ রাতেইিএ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোবাইডেন। কিন্তু দেশটির সাধারণ জনগণের চাপে এমন সিদ্ধান্ত নিতে গেলেও তেলের বাজারে আগুন লেগে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বাজারই তেল সরবরাহের অভাবে অস্থির হয়ে পড়তে পারে। ফলে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করতে গিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তো রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করে আত্মঘাতী হওয়ার পথেই এগোচ্ছে কিনা যুক্তরাষ্ট্র তা হয়তো আজ রাতেই জানা যাবে।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) হোয়াইট জাউস জানায়, আজ রাতেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ঘোষণা দিতে পারেন।

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় এটি হতে যাচ্ছে রাশিয়ার ওপর সবশেষ নিষেধাজ্ঞা। মার্কিন আইনপ্রণেতারা এ পদক্ষেপ নেবার জন্য বাইডেন প্রশাসনের ওপর চাপ দিয়ে আসছিলেন। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

যুক্তরাজ্যও তেল নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে:

এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এর আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার জবাবে বলেছেন, রোশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে জার্মানির সঙ্গে যুক্ত গ্যাসলাইন বন্ধ করে দেবে। তাতে গ্যাস সংকটে পড়বে ইউরোপ। অন্যদিকে তিনি হুশিয়ার করেছেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রামিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।

যুক্তরাষ্ট্রের পর যুক্তরাজ্যও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার কথা ঘোষণা করতে যাচ্ছে বলে বিবিসি জানাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মঙ্গলবার আরো পরের দিকে একথা ঘোষণা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে – আগামী কয়েকমাসে পর্যায়ক্রমে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে, এবং রাশিয়ার গ্যাস এর আওতায় পড়বে না।

রাশিয়ার ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে এবং রাশিয়াকে অর্থনৈতিক চাপে রাখতে দেশটি থেকে তেল না কেনার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। বিকল্প বাজার খুঁজতে বাইডেন ভাবছেন সৌদি আরব, ভেনেজুয়েলা ও ইরান থেকে তেল কেনার কথা। তবে এ জন্য বাইডনকে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। খোদ মার্কিন সিনেটররাই এর সমালোচনা করছেন। কেউ বলছেন ভেনেজুয়েলা বা ইরানের মতো দেশ থেকে তেল আমদানি বা তাদের ওপর নির্ভর করা ঠিক হবে না। কারও মতে যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই তেল-গ্যাস উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। তাহলে এসব দেশের কাছে যাওয়া কেন?

ভেনেজুয়েলার কাছ থেকে তেল আমদানির পরিকল্পনা কতটা ভালো, সিএনএনের এ প্রশ্নের জবাবে সিনেটর মার্ক কেলে বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও গ্যাস কেনাটা ঠিক হবে না। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রেই গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে।

সিনেট জিওপি ক্যাম্পেইনের প্রধান সিনেটর রিক স্কট বলেন, ‘রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করা উচিত আমাদের। তবে তেলের জন্য আমাদের ভেনেজুয়েলামুখী হওয়া ঠিক হবে না।’

সিনেটর জো মানচিন বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা আমাদের জন্য নয়। অন্য দেশ তাদের কাছ থেকে তেল কিনতে সক্ষম হতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কাজ করতে পারি। আমরা কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে কাজ করতে পারি। অন্য অনেক দেশে এ সুযোগ নেই।’

মানচিন বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা আর ইরান আমাদের জন্য সব সময়ই কঠোর। সৌদিরা কিছুটা নমনীয় হতে পারে। তবে আমাদের যা করা উচিত, তা–ই করতে হবে।’

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post নারীর ক্ষমতায়নে শীর্ষে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
Next post মালদ্বীপে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন
Close