Read Time:4 Minute, 16 Second

সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে একজন বাংলাদেশির নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। অথচ এমন দাবির পক্ষে কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা। পাঁচ বছরের দুর্বিষহ জীবন ও আদালতে লড়াইয়ের পর অবশেষে নিজের নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন ওই ব্রিটিশ নাগরিক।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক রিপোর্টে নাগরিকত্ব হারানোর পর তার বিধ্বস্ত জীবনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। এতে জানানো হয়, ওই ব্যক্তির জন্ম লন্ডনে হলেও তার স্ত্রী ও সন্তানরা থাকেন বাংলাদেশে।

২০১৭ সালে তাদের কাছে আসতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সে সময় আকস্মিক তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয় ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে রাষ্ট্রহীন অবস্থায় গত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশেই আটকে ছিলেন। বাংলাদেশে বসেই তিনি ব্রিটিশ আদালতে নাগরিকত্ব ফিরে পেতে লড়াই শুরু করেন। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আদালতের নথিপত্রে র্তার নাম গোপন রাখা হয়েছে। ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিলের কারণ হিসেবে জানিয়েছিল যে ওই ব্যক্তি একজন ইসলামপন্থি উগ্রবাদী। তিনি সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে বিদেশে সফর করতে চেয়েছেন। ফলে তাকে ব্রিটেনের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কিন্তু তার আইনজীবী ফাহাদ আনসারি জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব বাতিল নিয়ে ব্রিটিশ সরকার কোনো ব্যাখ্যা কিংবা তার সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার পক্ষে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ প্রদান করতে পারেনি। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে বেআইনি দাবি করে বলেন, এ কারণে তার মক্কেলের জীবন থেকে পাঁচটি বছর হারিয়ে গেছে। এদিকে নাগরিকত্ব ফিরে পেয়ে ব্রিটেনে ফেরেন ওই ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে আনা ব্রিটিশ সরকারের অভিযোগকে ঠুনকো দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত অজ্ঞাত উদ্দেশ্যে অজ্ঞাত এক দেশে সফরের চেষ্টা করেছি আমি। এমন অভিযোগে নিজেকে কীভাবে নির্দোষ প্রমাণ করব?’ ওই ব্যক্তি যখন বাংলাদেশে ছিলেন তখন তার স্ত্রী আরেকটি সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু সে সময় যেহেতু তিনি রাষ্ট্রহীন ছিলেন তাই তার ওই সন্তানকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি। তবে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শিগগিরই আদালতে এর শুনানি হবে বলে গার্ডিয়ানের রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তার আইনজীবী আনসারি বলেন, ‘আমরা তার সন্তানকে একজন ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি এনে দিতে লড়াই চালিয়ে যাব।’ গার্ডিয়ানের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা একটি বিতর্কিত আইন পাস করতে যাচ্ছেন যার অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাউকে না জানিয়েই তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দিতে পারবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ইউক্রেনে ৯০ টন ‘মারণাস্ত্র সহায়তা’ পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র
Next post নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে অভিবাসন বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান শাহানা হানিফ
Close