Read Time:5 Minute, 26 Second

শ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়াতে শীর্ষ স্থানে থাকা বহু দেশকে পেছনে ফেলে এবারই প্রথম একচেটিয়া অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাংলাদেশি কর্মীরা।

এছাড়া পুরনো কিছু নিয়মকানুন পরিবর্তন করে শ্রমিক বান্ধব আইন করেছে দেশটির অভিবাসন ও মানবসম্পদ বিভাগ। তাই বলা যায়, দীর্ঘ তিন বছর পর দেশটির শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হলো।

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের একটি প্রতিবেদন সূত্রে এমন খবর পাওয়া গেছে।

এমনিতেই পরিশ্রমী জাতি হিসেবে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ানদের কাছে পূর্বপরিচিত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির মোহাম্মদ একাধিকবার বাংলাদেশিদের প্রশংসা করেছেন।

আশার কথা হলো, আগের চেয়ে এবারের সমঝোতা স্মারকে কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আসছে। এ পরিবর্তনগুলো শ্রমিকদের কল্যাণ বয়ে আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

১. জিটুজি প্লাস পদ্ধতি থাকছে না।
২. যুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি।
৩. কর্মীদের বাধ্যতামূলক বিমা থাকছে, তাই তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে সহযোগিতা পাবেন।
৪. কর্মীদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা ও খরচ বহন করবে নিয়োগদাতা, এতে অবৈধ হয়ে আর আটকে পড়ে থাকবে না বাংলাদেশিরা।
৫. চুক্তি মেয়াদে কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সিকে, এতে এজেন্সির প্রতারণা ও হয়রানি কমবে।
৬. বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত এতে দীর্ঘ সময় মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে।

তবে কর্মীদের মালয়েশিয়া যেতে অভিবাসন ব্যয় বা খরচ কত হবে, তা জানা যাবে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর।

এদিকে, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে সমঝোতা স্মারক সই করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে মালয়েশিয়ায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান আনুষ্ঠানিক চিঠিতে এ আমন্ত্রণ জানান।

গত ১০ ডিসেম্বর রাতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীকে চলতি মাসের ১৬ বা ১৭ তারিখে সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য চিঠি পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানান মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী। সেদিন সকালে বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্মারক অনুমোদন দেয় দেশটির মন্ত্রিসভা। একইসাথে ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, ‘১৫ নভেম্বর আমার আগের চিঠি অনুসারে, আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, ১০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা বাংলাদেশী কর্মীদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের অনুমোদন দিয়েছে। এটা মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সই হবে।’

এম সারাভানান চিঠিতে উল্লেখ করেন, ‘১৬ বা ১৭ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ায় আসার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানাতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। এ বিষয়ে আপনার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। মালয়েশিয়া আপনাকে ও প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করছে।’

তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় ও কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মধ্যেও এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ১৬ বা ১৭ তারিখ নিয়ে মালয়েশিয়ান পক্ষের আগ্রহ বেশি। কারণ হিসেবে সূত্র বলছে, এরপর মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বেশ কিছু দিন মালয়েশিয়ায় থাকবেন না। আবার, বাংলাদেশে ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ব্যস্ততা রয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post কানাডা, আমিরাতে ঢুকতে না পেরে মুরাদ আবার ঢাকায়
Next post ৫ মাসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রবাসী আয় ৪০ হাজার কোটি টাকা
Close