Read Time:4 Minute, 57 Second

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার পেছনে গোষ্ঠীটির সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের চুক্তি প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে।

তথাকথিত দোহা চুক্তি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করেছিল। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান হিসেবে আফগানিস্তান থেকে সেনা ও নাগরিক প্রত্যাহার কার্যক্রম তদারক করা জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাককেনজি বলেছেন, ওই চুক্তি আফগান সরকার ও সামরিক বাহিনীর ওপর ‘সত্যিই ক্ষতিকর প্রভাব’ রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সহমত পোষণ করে বলেছেন, চু্ক্তিটি তালেবানকে ‘আরও শক্তিশালী’ হতে সাহায্য করেছে।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিস কমিটির কাছে দেওয়া সাক্ষ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তারা এসব মন্তব্য করেন।

সেনা প্রত্যাহারের তারিখের পাশাপাশি দোহা চুক্তিতে ‍তালেবানকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের হুমকি দেওয়া থেকে আল কায়েদার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে বিরত রাখার পদক্ষেপ নেওয়ার শর্তও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পর নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রত্যাহারের ওই পরিকল্পনা অব্যাহত রাখেন, শুধু তারিখটি মে-র জায়গায় ৩১ অগাস্ট নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর ন্যাটো মিত্রদের চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ২০ বছর ধরে চলা আফগান যুদ্ধের অবসান হয়।

আশরাফ ঘানি সরকারের পতনের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র দেশগুলোর আফগানিস্তান থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা এবং লাখ লাখ আফগানের দেশটি ছেড়ে পালাতে চাওয়ার মধ্যে কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিস কমিটির এ শুনানি অনুষ্ঠিত হলো।

ওই সময় কাবুল বিমানবন্দরের সামনে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) এক আত্মঘাতী হামলায় ১৩ মার্কিন সৈন্যসহ ১৮২ জন নিহত হয়েছিল।

আর্মড সার্ভিস কমিটিকে জেনারেল ম্যাককেনজি বলেন, আফগান সরকারের ওপর দোহা চুক্তির একটি শক্তিশালী মানসিক প্রভাব পড়েছিল। কারণ এতে একটি তারিখ নির্ধারিত ছিল ‘যখন সব সহযোগিতা শেষ হয়ে যাবে বলে তারা ধরে নিয়েছিল’।

ম্যাককেনজি জানান, ‘কিছু সময়’ তার বিশ্বাস ছিল যদি যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তাদের সামরিক পরামর্শকদের সংখ্যা হ্রাস করে আড়াই হাজারের নিচে নিয়ে যায় তাহলে আফগান সরকার ও সামরিক বাহিনীর পতন অনিবার্য হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, দোহা চুক্তির পর এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সেনা সংখ্যা হ্রাস করার আদেশ দিলে ‘কফিনে আরেকটি পেরেক ঠোকা হয়ে যায়’।

অস্টিন জানান, দোহা চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় গোষ্ঠীটি ‘আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তারা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে আক্রমণ বৃদ্ধি করে এবং আফগানরা প্রতি সপ্তাহেই বহু লোক হারাতে থাকে’।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post মাদ্রিদের অভিজ্ঞতায় নদী দখল-দূষণমুক্ত করবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি
Next post ৯ মাসে ১৫৪ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার
Close