Read Time:6 Minute, 13 Second

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্কপর্বে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেবেন। প্রতিবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বক্তৃতা দেবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রা, ইনক্লুসিভ ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট, স্বাস্থ্যখাতে সাফল্য সম্পর্কে আলোকপাত করবেন। পাশাপাশি, বিশ্বশান্তি, নিরাপদ অভিবাসন, করোনাভাইরাসের টিকার ন্যায্যতাভিত্তিক বণ্টন, বৃহৎ পরিসরে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে পেটেন্টসহ মেধাস্বত্ব উন্মুক্তকরণ, ফিলিস্তিনি ও বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক সংকট, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত বিষয় ওঠে আসবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর হতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের উচ্চপর্যায়ের বিতর্কপর্ব শুরু হতে যাচ্ছে। এ অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল আগমী ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন। কোভিড বাস্তবতায় এবারের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল খুব ছোট আকারে গঠন করা হয়েছে। আমি এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হব।

প্রথমত : এবারের অধিবেশনের একটি বড় অংশ জুড়ে থাকবে কোভিড-১৯ ও পরবর্তীতে টেকসই পুনরুদ্ধার ও পুনর্নির্মাণ। কোভিড-১৯ অতিমারি হতে মুক্তিলাভের জন্য, বিশ্বব্যাপী ‘ভ্যাকসিন বৈষম্য’ দূরীকরণের বিষয়টি এবারের অধিবেশনে বিশেষভাবে আলোচিত হবে।

দ্বিতীয়ত : জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রেসপন্স ও রিকভারি কোভিড পরবর্তীতে টেকসই পুনরুদ্ধারের অন্যতম শর্ত। তাই আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে। কপ২৬ থেকে বিশ্ব যাতে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা পেতে পারে সে বিষয়েও এবারের সাধারণের পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আলোচনা করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এরই মধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যৌথ উদ্যোগে জলবায়ু বিষয়ে সোচ্চার দেশগুলোকে নিয়ে একটি সভা আয়োজন করছে।

তৃতীয়ত : কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে বিশ্বব্যাপী দেশগুলো টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠ অর্জনে যে অগ্রযাত্রা- তা অনেকাংশেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠে সম্মিলিতভাবে টেকসই বিনির্মাণের বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আলোচনা করবেন। এসডিজির প্রতিটি গোল ও টার্গেটকে ভিত্তি করে কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধারের বিষয়টি তাই এ অধিবেশনে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

চতুর্থত : এবারের সাধারণ অধিবেশনে ‘ইউএন ফুড সিস্টেম সামিট’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভার মূল লক্ষ্য হলো- টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠের অন্তর্ভুক্ত- ক্ষুধা, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য এবং বৈষম্যের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলির সঙ্গে বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার আন্তসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে, সেই উন্নয়ন অভিষ্ঠ অর্জন তরান্বিত করা।

পঞ্চমত : অতিমারিকালে আমরা লক্ষ্য করছি যে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অসহিষ্ণুতা, বৈষম্য-বিভেদ ইত্যাদি আশংকজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরনের বিভেদ নিয়ে কখনোই টেকসই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়টিও এবারের অধিবেশনে আলোচনায় আসবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন যে, ২০০১ সালে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বর্ণবৈষম্য দূরীকরণের ওপর একটি ডিক্লারেশন গ্রহণ করে। এই বছর সেই ডিক্লরেশন গৃহীত হওয়ার ২০ বছর পূর্তি উদযাপন হতে যাচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা আয়োজন করছে। বর্ণবৈষম্য ও জাতিগত বিভেদ ভুলে সমতার ভিত্তিতে টেকসই পুনরুদ্ধারের বিষয়টি এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রাধান্য পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

ষষ্ঠত : প্রতিবারের মতো এবারও নিরস্ত্রীকরণ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে এবং সাধারণ পরিষদের সভাপতি ২৮ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ ও এই বিষয়ে বৈশ্বিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য এক উচ্চপর্যায়ের সভা আয়োজন করছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে কাদের সিদ্দিকী
Next post হাতুড়ি দিয়ে ঘর ভাঙা হয়েছে, ছবি আছে, তদন্ত হবে
Close