Read Time:4 Minute, 33 Second

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলকে মূলত চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে তালেবান বাহিনী। দেশটির ৩৪টি প্রদেশের ১৮টির নিয়ন্ত্রণ সশস্ত্র এই বাহিনীর হাতে চলে গেছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের প্রায় নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানের হাতে। সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা উত্তরাঞ্চলের একমাত্র বড় শহর মাজার-ই-শরিফে তুমুল যুদ্ধ চলছে। আগে থেকেই এই শহর তালেবান-বিরোধী হিসেবে পরিচিত।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ শনিবার জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি নিরাপত্তা বাহিনী পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন এবং সেজন্য কাজ চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি জানিয়েছেন, এটিই এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে। যুদ্ধ ও সহিংসতা ‘অবসানের চেষ্টায় দ্রুত গতিতে’ দেশটির আন্তর্জাতিক মিত্র ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলার কথাও জানান ঘানি।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তালেবানের বড় ধরনের সামরিক বিজয়ের মধ্যেই এই প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণদানে প্রেসিডেন্ট জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আপনাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি কথা দিচ্ছি, কিছুতেই দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে দেব না। মানুষ যাতে ভিটেমাটি ছাড়া না হন, তা নিশ্চিত করেই ছাড়ব।’

তালেবানের যতই অগ্রযাত্রা হচ্ছে, ততই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে মানুষ জানমাল নিয়ে রাজধানীর দিকে ছুটছে। ফলে কাবুল এখন বাস্তুচ্যুত শরণার্থীতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় সেখানে তালেবান হামলা চালালে ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ। আজ বৈশ্বিক সংস্থাটি বলেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য তা ক্রমেই বিধ্বংসী হয়ে উঠছে।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আল জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে আজ জানিয়েছে, কাবুলের দক্ষিণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ লোগার আজ দখলে নিয়েছে তালেবান। প্রদেশটি থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হুদা আহমাদি জানিয়েছেন, তালেবান কাবুল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার (সাত মাইল) দূরে চার আশাফ জেলা শহরে পৌঁছে গেছে।

এই রকম একটি পরিস্থিতিতে মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মীদের সরিয়ে আনার জন্য পেন্টাগন আফগানিস্তানে নতুন করে তিন হাজার সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। এরই মধ্যে সৈন্যরা কাবুলে আসতে শুরু করেছে। এসব সেনা কাবুল বিমানবন্দরে ঘাঁটি করে অবস্থান নেবে।

এদিকে মার্কিন দূতাবাস কর্মীদেরকে স্পর্শকাতর তথ্য, নথি ও কম্পিউটার ধ্বংসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন সরকার চাইছে, শুধু গুরুত্বপূর্ণ কিছু কূটনীতিক কাবুলে অবস্থান করবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে, কাবুলে দূতাবাস খালি করা হবে এবং সেখানে শুধু কোর ডিপ্লোম্যাটরা অবস্থান করবেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল : মির্জা ফখরুল
Next post ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম’
Close