Read Time:6 Minute, 2 Second

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদায় পালন করেছে।
দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে সেখানকার সময় অনুযায়ি গতকাল আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও ১৫ আগস্টের ভয়াল কাল রাতে শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দূতাবাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে করোনা মহামারীর প্রেক্ষিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দূতাবাসের সদস্য এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি একইসাথে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হওয়ায় রাজনৈতিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও গুণীজন অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল সম্পর্কে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করেন। শেখ কামালকে ‘চিরতারুণ্যের প্রতীক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি একদিকে যেমন ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক, তেমনি অন্যদিকে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর এডিসি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তাঁরা আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে শেখ কামালের শহীদ হওয়া বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য ছিল অপূরণীয় ক্ষতি।
রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এ ছাড়া তিনি ১৫ আগস্টের ভয়াল কাল রাতে শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত তাঁকে তারুণ্যের মূর্ত প্রতীক- নানা গুণে গুণান্বিত দেশপ্রেমিক যুবক বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শেখ কামাল ছিলেন একাধারে একজন তুখোড় ক্রীড়াবিদ, দক্ষ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক, সংগীত ও অভিনয়শিল্পী, একজন একনিষ্ঠ রাজনৈতিক কর্মী ও সর্বোপরি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের ফুটবলের আধুনিকতার জনক হিসেবে শেখ কামালকে আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রদূত তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নয়নের যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন ও উদ্যোগী হয়েছিলেন, তারই সফল বাস্তবায়ন ঘটেছে প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাঁর অবদান স্বরণীয়। এ প্রসঙ্গে, ঢাকা থিয়েটার ও স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠাসহ একাধিক উদ্যোগে তাঁর অগ্রণী ভূমিকার কথা রাষ্ট্রদূত স্মরণ করেন।
একজন সৃজনশীল প্রাণদীপ্ত, অসাধারণ দেশপ্রেমিক যুবক হিসেবে শহীদ শেখ কামাল আগামী প্রজন্মের জন্য আদর্শ ও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরে দেশের যুব সমাজ যেন কোনো ভাবেই বিপথে চলে না যায়, হতাশাগ্রস্থ না হয় সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যুব সমাজের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। যুব সমাজকে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মকান্ডে যুক্ত করেছেন।
রাষ্ট্রদূত নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস, জাতির পিতার সংগ্রামী ও ত্যাগি জীবন বিশেষ করে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জীবন কর্ম তুলে ধরতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শণ করা হয়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সৌদিতে বাংলাদেশিকে গলা কেটে হত্যা
Next post জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ কামালের ৭২তম জন্মর্বাষিকী উদযাপন
Close