Read Time:4 Minute, 55 Second

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) বিকল্প হিসেবে শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-সেভেনের একটি বৈশ্বিক অবকাঠামো পরিকল্পনা ঘোষণার পর কড়া হুঁশিয়ারি এসেছে চীনের। দেশটি বলছে, দলবেঁধে বিশ্ব চালানোর দিন শেষ। সেই দিন এখন আর নেই কয়েকটি দেশের ‘ছোট একটি গ্রুপ’ বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।

রবিবার জি-সেভেন নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে চীন একথা বলেছে। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত তিন দিনের জি-সেভেন সম্মেলনে শনিবার চীন বিরোধী ঐক্যের প্রতিক্রিয়ায় পরদিন লন্ডনের চীনা দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে চীন এই হুঁশিয়ারি দিল।

গত কয়েক বছর ধরে বিশ্ব অর্থনীতি ও সামরিক খাত উভয় ক্ষেত্রে চীন আগ্রাসী গতিতে এগিয়ে চলছে। জি-সেভেন জোট চীনের আগ্রাসনের সুসংহত জবাব দেওয়ার একটা পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার জি-৭ সম্মেলনে বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড-বিথ্রিডব্লিউ নামে একটি প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

নতুন ওই পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে সেটা শুধু চীনকে মোকাবেলা করা বা চীনকে টেক্কা দেওয়ার বিষয় নয় বলে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

জি-সেভেনের উল্লেখ না করেই চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আন্তর্জাতিক যে কোনও সিদ্ধান্ত বিশ্বের গুটিকয়েক দেশ ছোটখাট দল তৈরি করে নিয়ে ফেলত। আমরা বলতে চাই, সেই দিন চলে গেছে। এখন ছোট বা বড়, শক্তিশালী বা দুর্বল, ধনী কিংবা গরীব বলে আলাদা কিছু নেই। বিশ্বে সবাই সমান। সব দেশকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

জি-সেভেনের ওই পরিকল্পনায় চীনকে মোকাবিলায় ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড’ অর্থাৎ আরও সমৃদ্ধ, আরও উন্নত ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নেতারা। এবার জি-সেভেন সম্মেলনে করোনা মোকাবেলা, প্রাকৃতিক সুরক্ষার মতো বিষয়গুলোকে ইস্যু করা হলেও নেপথ্যে চীন-বিরোধিতায় শিল্পোন্নত দেশগুলো একমত হতেই এ সম্মেলন বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

লাখ লাখ কোটি ডলারের চীনের বিআরআই এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত একশটির বেশি দেশ যুক্ত হয়েছে। এই প্রকল্পের মধ্যে রেলওয়ে, সড়ক, বন্দর, মহাসড়ক ও অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো রয়েছে। ২০১৩ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শির ঘোষনা দেওয়া প্রকল্পটি এশিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপ ছাড়িয়ে আরো বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর বিরুদ্ধে পাল্টা কোনো প্রকল্পকে বড় চপোটাঘাত হিসেবে দেখছে বেইজিং।

গত শুক্রবার লন্ডনে আনুষ্ঠানিকভাবে জি-সেভেন সম্মেলন শুরু হয়। এর উদ্বোধন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। জোটভূক্ত না হলেও জনসনের আহ্বানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ভারতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়লো
Next post লীনা তাপসীর বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ আরেক সঙ্গীতশিল্পীর
Close