Read Time:5 Minute, 53 Second

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে এখনো অসুস্থ অবস্থায় আছেন। সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। আজকে বেগম জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ডাক্তাররা পরামর্শ দিচ্ছেন, বাইরে নিয়ে যাও। তারা (সরকার) বাইরে যেতে দিচ্ছে না। এটা হচ্ছে তাদের দুবর্লতা, তাদের রাজনীতির যে দেউলিয়াপনা এবং জনগণ থেকে যে বিচ্ছন্ন তারই প্রমাণ। সরকার দুর্নীতিপরায়ণ সরকারে, অত্যাচারী-ফ্যাসিবাদী সরকারে পরিণত হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পরে সবাই ভেবেছিল যে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে, বিএনপিকে আর দেখা যাবে না। কারণ আসল নেতাই চলে গেছেন। কিন্তু দেশনেত্রী যিনি একজন গৃহবধূ ছিলেন তিনি পতাকাকে তুলে ধরছেন। কিসের পতাকা? স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের, গণতন্ত্রের পতাকা যেটাকে ধারণ করে এদেশের মানুষ বেঁচে আছে। তার যে মূলমন্ত্র, তার যে আত্মা বাংলাদেশের যে আত্মা সেটা হচ্ছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, সেই আত্মা হচ্ছে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের আকংখা, সেই আত্মা হচ্ছে গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা। দীর্ঘ ৯ বছর পতাকাকে তুলে ধরে স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন। এখন অবধি খালেদা জিয়া আমি তো মনে করি, এই দেশে জীবিত আছেন যে সমস্ত রাজনীতিবিদ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মহিয়শী নেত্রী হচ্ছেন খালেদা জিয়া। তার অবদার আমি মনে করি কারো চেয়ে খাটো নয়।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন কারাগারে। উনি কারাগারে বলেই গণতন্ত্র এখন কারাগারে, গণতন্ত্র বন্দি হয়ে আছে। আমাদের অসংখ্য নেতা প্রাণ হারিয়েছেন, গুম হয়ে গেছেন, অসংখ্য মামলা, ৩৫ লাখের বিরূদ্ধে মামলা। তারপরে কিন্তু বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিএনপি আছে, চলছে এবং সেচ্চার হয়েই আছে। আসুন আমরা সমস্ত প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের যে আদর্শ তাকে সামনে নিয়ে, তার সেই যুদ্ধ করার যে মানসিকতা তাকে সমানে নিয়ে এবং খালেদা জিয়ার যে আপসহীন মনোভাব গণতন্ত্রকে রক্ষা করবার জন্য। তাকে পুঁজি করে তার নেতৃত্বে এবং ১৩ হাজার মাইল দূরে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যাকে আমরা সবাই তারণ্যে অহংকার বলি, যার নেতৃত্বে আমরা আন্দোলন করছি, সংগ্রাম করছি তাকে নিয়েই আমাদের হারিয়ে যাওয়া যে গণতন্ত্র তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে পারব এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে পারব- এই আহ্বান আমি জানাচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কখনো পিছু ফিরে তাকাবেন না। আর কখনো এই কথা মনে করবেন না, আমরা পারব না। আমরাই পারব এবং অবশ্যই ইনশাল্লাহ আমরা জয়ী হব। যে দানব আমাদের অধিকারগুলো হরণ করে নিয়েছে, যে দানব শুধুমাত্র লুণ্ঠনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিয়েছে। সেই দানবকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি সরকার আমাদের প্রতিষ্ঠান করতে হবে আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য জীবন-কর্মের ওপর প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহর লেখা গ্রন্থ দুইটি সকল নেতা-কর্মীকে পড়ার পরামর্শ দেন ফখরুল।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিথীকা বিনতে হোসাইন, ইয়াসীন আলীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বিএনপির চোখেই পড়ে না : তথ্যমন্ত্রী
Next post সৌদি প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে সারোয়ার আলমের ৬ নির্দেশনা
Close