Read Time:5 Minute, 54 Second

করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় কানাডার অন্টারিও প্রদেশে আন্তঃপ্রদেশ ভ্রমণকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, জরুরি অবস্থা এবং স্টে হোম অর্ডার দুই সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও বিনোদনমূলক ক্রিয়াকলাপগুলোতে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড শুক্রবার এক ঘোষণায় জানিয়েছে, প্রদেশের জন্য ‘কয়েকটি বিকল্প বাকি রয়েছে’। কারণ সংক্রমণ এবং হাসপাতালে ভর্তি রেকর্ডের হার উচ্চতায় রয়েছে।

কানাডায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অন্টারিও, কুইবেক এবং আলবার্টায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে, যা আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলেছে। শনিবার থেকে প্রদেশে কারফিউ জারি করার কথা বলা হয়েছে। কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে ইতিমধ্যেই মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

কানাডার বৃহত্তম চারটি প্রদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রদেশ হলো অন্টারিও। এখানে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ থেকে ভয়াবহ খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রদেশের স্থানীয় পাবলিক হেলথের ডাক্তাররা করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয়রা অনেকেই তাদের মাস্ক না পরায় ও ক্রমাগত সামাজিক গ্যাদারিং করে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, অন্টারিও প্রদেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত ৭ এপ্রিল যে জরুরি জনস্বাস্থ্য বিধিনিষেধ বা ‘স্টে হোম লকডাউন’ জারি করা হয়েছিল, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসারে সেখানে আরও কঠোর লকডাউনের ঘোষণা করা হয়েছে। অন্টারিওর জরুরি অবস্থা এবং ‘স্টে এট হোম’ অর্ডার এখন কমপক্ষে ২০ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এছাড়া অন্টারিও আন্তঃপ্রদেশ ভ্রমণকে সীমাবদ্ধ করছেন ডগ ফোর্ড।

অন্টারিওর সলিসিটার জেনারেল সিলভিয়া জোনস বলেছেন, এখন কোনো লোককে তাদের বাসস্থান ত্যাগ বা ব্যক্তিগত বিনা প্রয়োজনে তাদের বাসস্থান ত্যাগ করার কারণ অনুসন্ধান করতে থামানোর কর্তৃত্ব থাকবে পুলিশের।

অন্টারিও প্রদেশে যে হারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে, তার ট্রেন্ড অব্যাহত থাকলে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী এক মাসের মধ্যে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।

উল্লেখ্য, গতবছর যখন করোনা শুরু হয়, তখন প্রতিদিন আক্রান্ত হতো হাজার খানেক। তখন সমস্ত নন-ইমার্জেন্সি ও নন-অ্যাসেনশিয়াল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মানুষের চলাফেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অথচ এখন পরিস্থিতি তার চেয়ে পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেলেও নানাভাবে তা ঢিলেঢালা কায়দায় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

শুক্রবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক ঘোষণায় বলেছিলেন, ফেডারেল সরকার আরও অতিরিক্ত আট মিলিয়ন ডোজ ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিন সুরক্ষিত করেছে। কানাডা ইতিমধ্যে যে ভ্যাকসিন ডোজ কিনে নিয়েছে এখনকার ফাইজার-বায়োএনটেক শটগুলো বিদ্যমান ডোজের অতিরিক্ত থাকবে এবং মে মাসে আরও চার মিলিয়ন ডোজ, জুনে দুই মিলিয়ন অতিরিক্ত শট এবং তৃতীয় কোয়ার্টারে থেকে ৪ লাখ ডোজ কানাডা ইতিমধ্যে কিনে নিয়েছে। জুলাইয়ে বিতরণে অতিরিক্ত আরও দুই মিলিয়ন ডোজ যুক্ত করা হবে।

দেশের নাগরিকদের সুস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও শক্তিশালী করতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে কানাডা সরকার। তাছাড়াও নাগরিকরা যেন দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় আসে, সেদিকেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ১৩ হাজার ৯০৭ জন। করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ হাজার ৫৯১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৩ হাজার ৫৫৩ জন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালিত
Next post অভিনেতা এস এম মহসীন আর নেই
Close