যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিস শহরের কাছে আরেকজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে পুলিশ গুলি করে হত্যা করার পর বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং ব্রুকলিন সেন্টার শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম ডন্টে রাইট (২০)।
ব্রুকলিন সেন্টারের মেয়র কারফিউ জারি করে বিক্ষোভকারীদের বাড়ি ফিরে যেতে বলেছেন।
জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির হত্যার দায়ে এক পুলিশ অফিসারের বিচার নিয়ে মিনিয়াপোলিস এমনিতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে আছে।
বিক্ষোভের যেভাবে শুরু
ব্রুকলিন সেন্টারের পুলিশ সদর দফতরের বাইরে রোববার শত শত বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে ডন্টে রাইটের নামে স্লোগান দিতে থাকে।
বড় শহর মিনিয়াপোলিস থেকে জায়গাটি মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবর দিচ্ছে, এরপর দাঙ্গা পুলিশ রাস্তায় নামলে উত্তেজনা বেড়ে যায় এবং জনতা পুলিশের দুটি গাড়ির ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
প্রতিবাদকারীরা সে সময় ডন্টে রাইটের স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়ে দেয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের সময় কিছু দোকানপাটে লুঠপাট শুরু হলে মেয়র শহরে কারফিউ জারি করেন।
উত্তপ্ত পরিস্থিতি
বিবিসির সাংবাদিক স্যামান্থা গ্র্যানভিল ব্রুকলিন সেন্টার থেকে জানাচ্ছেন, বিক্ষোভের মুখে পুলিশ সদস্যরা সদর দফতরের বাইরে ব্যারিকেড তৈরি করেন। তাদের পরনে ছিল দাঙ্গা পুলিশের পোশাক।
শত শত বিক্ষোভকারী ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টায় একটু একটু করে এগুতে তাকে এবং স্লোগান দিতে থাকে : ‘বিচার না পেলে আমরা শান্তিও পাব না।’
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন ডন্টে রাইটের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব।
কী ঘটেছিল ডন্টে রাইটের?
এক বিবৃতিতে ব্রুকলিন সেন্টারের পুলিশ বিভাগ জানাচ্ছে, রোববার বিকেলে ডন্টে রাইট ট্রাফিক আইন অমান্য করার পর পুলিশ তার গাড়িকে থামায়। এ সময় পুলিশ জানতে পারে তার নামে আগে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
যখন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে চায় তিনি তখন আবার গাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েন। এসময় পুলিশ তার ওপর গুলি চালায়।
এর পরও তিনি গাড়ি চালিয়ে কিছু দূর গিয়ে আরেকটি গাড়ির সাথে ধাক্কা মারেন। এরপর ঘটনাস্থলেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তার সাথে থাকার একজন যাত্রীর গায়েও আঘাত লেগেছে। তবে কোনো প্রাণসঙ্কট নেই।
মিনিয়াপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলার প্রধান আসামি পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের বিচার গত দু’সপ্তাহ ধরে চলছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, শভিন ৯ মিনিট ধরে ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু চেপে বসেছিলেন।
এই দৃশ্য দেখার পর বিশ্বজুড়ে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
শভিনের বিচার আরো এক মাস ধরে চরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবং রায় ঘোষণার সময় আরো গোলযোগ হতে পারে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।
More Stories
গাজায় ইসরাইলের হামলা বন্ধের দাবি : যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সারাবিশ্বের দৃষ্টি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরাইলের হামলা বন্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে ‘ক্যাম্প...
গাজা নীতির বিরোধিতা করে মার্কিন পররাষ্ট্র মুখপাত্রের পদত্যাগ
যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতির বিরোধিতা করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরবি ভাষার মুখপাত্র হালা রাহারিত পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিঙ্কডইনে এক...
ইসরায়েলে হামলার জেরে ইরানের বিরুদ্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ নিলো যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলে হামলার পর পরই ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার...
পর্ন তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় ট্রাম্পের বিচার শুরু
পর্ন তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় বিচার কার্য শুরু হয়েছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এই প্রথম কোনো ফৌজদারি...
যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কের পরীক্ষা গাজা যুদ্ধ
ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্ষমতার পালাবদল চলতে থাকলেও ডেমোক্র্যাটস ও রিপাবলিকানদের সবসময় যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক ইস্যুতে এক থাকতে দেখা গেছে। দুই দলের নেতারা...
মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় ইউক্রেনের সম্পৃক্ততা নেই: হোয়াইট হাউজ
মস্কোর কনসার্ট হলে হামলার সঙ্গে ইউক্রেনের যোগসাজশ ছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু এই হামলার সঙ্গে কিয়েভের...