Read Time:5 Minute, 18 Second

করোনা পরিস্থিতির কারণে বহুমাত্রিক সংকটে অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, আবার কবে তারা কাজে যোগ দিতে পারবেন বা আদৗ পারবেন কি না, জানেন না কেউই। নিয়োগকর্তারাও সুষ্পষ্ট করে এ বিষয়ে কিছু বলছেন না।

এ অবস্থায় কিভাবে আগামীতে পরিবার চালাবেন সেই দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। দেশে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা যেখানে ফের বিদেশে যাওয়ার চিন্তায় মগ্ন, তখন বিদেশে থাকা প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন বহুমাত্রিক সংকটে।

বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীদের জীবন ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব শীর্ষক জরিপে জানা যায়, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির সময়ে দেশে ফেরত আসা অভিবাসী কর্মীদের ৮৭ শতাংশেরই কোনো আয়ের উৎস নেই। ৭৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা এখন প্রচণ্ড দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও ভীতির মধ্যে রয়েছেন। ৩৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তাদের নিজেদের সঞ্চয় বলতে এখন আর কিছু নেই। ৯১ শতাংশ বলেছেন, তারা সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহায়তা পাননি।

এমন পরিস্থিতিতে গত ৭ মার্চ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব মালয়েশিয়ার আয়োজনে ‘মালয়েশিয়ায় নতুন করে বৈধতা ও ছুটিতে থাকা প্রবাসীদের বাস্তবতা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তাদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আলোচকরা।

পাশাপাশি আলোচকদের দাবি, যারা ছুটিতে রয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে অনেকেই কর্মস্থলে ফিরবেন। সে সময় সরকারি খরচে যেন তাদের পাঠানো হয়। এছাড়া অভিবাসীদের দালালদের প্রতারণা থেকে সুরক্ষায় নিবন্ধিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে এবং বৈধ কোম্পানিতে শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে। যাতে প্রত্যেক অভিবাসী শ্রমিক বিদেশের মাটিতে প্রতিশ্রুত চাকরি বেতন এবং আবাসন ও বীমা সুবিধা পায়।

আলোচকরা বলেন, নিয়োগকারী কোম্পানি কোনো অভিবাসী শ্রমিকের অধিকার লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট আইনের আওতায় প্রতিকারের বিধান করতে হবে।

প্রেস ক্লাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সী (বায়রা) যুগ্ন-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসাইন সোহেল, দৈনিক বাংলাদেশের খবরের কূটনৈতিক প্রতিবেদক মো. রবিউল হক, যমুনা টিভির নিউজ রুম এডিটর অমিত হাসান রবিন, অল-ইউরোপিয়ান প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি আবু তাহির, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব মালয়েশিয়ার সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমাদুল কবির।

আলোচকরা বলেন, মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার যে সুযোগ দিয়েছে, এই প্রক্রিয়া খুবই সহজ। সরাসরি ইমিগ্রেশনের তত্ত্বাবধানে এবারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। এর আগের বৈধকরণ প্রক্রিয়ায় তিনটি ভেন্ডরকে দায়িত্ব দেয়ায় বিদেশি কর্মীরা প্রতারিত হয়েছে। এবার কোনো ভেন্ডর না থাকায় প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। যদি কোনো সন্দেহ বা সমস্যা হয় তাহলে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তা নিতে প্রবাসীদের আহ্বান জানানো হয়।

মালয়েশিয়ায় গত বছরের মার্চ মাস থেকেই করোনাভাইরাস শনাক্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ন্ত্রণে লকডাউনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশটির সরকার। এ কারণে অনেকেই ছুটিতে দেশ এসে আর ফিরতে পারেননি কর্মস্থলে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তারা আবার দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে দুদেশের সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post সিডনিতে বিশ্ব নারী দিবস পালন
Next post প্রবাসীদের পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়াতে ফি লাগবে না
Close