বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অসদাচরণের পিছনে রয়েছে চাকরি রক্ষা ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ বিত্তের মালিক হওয়া। দুর্নীতি ও চাকরি রক্ষা করতে গিয়ে সরকারের ইচ্ছা পূরণে এরা দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছেন।
শুক্রবার (১২ ফেব্রয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনিয়ম, আর্থিক কেলেঙ্কারী এবং নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত এই নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এরপরেও তাদেরকে কেউ টলাতে পারে না। কারণ শেখ হাসিনাকে খুশি করাই এদের একমাত্র লক্ষ্য। দেশব্যাপী ভোট সন্ত্রাসের বৈধতা দান করতে গিয়ে কমিশন বিভিন্নভাবে আইন ও বিধি-বিধানের লঙ্ঘন করেছে গুরুতর অসদাচরণের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা যা বলেছিলেন তা হলো- এই মেশিনে দূর থেকে হ্যাক করা যায়। ভোটের ফলাফল ম্যানিপুলেট করা যায়। এ কথার সত্যতা এখন আওয়ামী নেতারা নিজেরাই অকপটে স্বীকৃতি দিচ্ছেন। লক্ষীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী ওরফে নয়ন ৩নং ওয়ার্ডের চর সেকেন্দার সফি একাডেমি মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় নোয়াখালির আঞ্চলিক ভাষায় বলেছেন, ‘নৌকার বাইরে ভোট দিলে ইভিএমে ধরি ফেলা যায়।
তিনি বলেন, তারা মনে করে সুষ্ঠু নির্বাচন করলে শেখ হাসিনা মাইন্ড করবেন এবং নির্বাচনের নামে লুটপাটে বাধা আসবে। বাধা আসবে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বক্তৃতার নামে দুই কোটি টাকার আত্মসাতে। নিয়োগ বাণিজ্যে চার কোটি টাকার দুর্নীতিতে, ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে। বাধা আসবে অবৈধভাবে কমিশনারদের গাড়ি ব্যবহারে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যাপক বাধাদানসহ পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, বিএনপি নেতাকর্মীদের মারপিট ও প্রকাশ্যে মাইকের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে না আসতে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবহিত করা হলেও কোনও প্রতিকার পাওয়া দূরের কথা, উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীসহ ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থক ও ভোটারদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে বানোয়াট ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
এ সময় তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব প্রত্যাহারের সরকারি হঠকারী ও অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামীকাল ১৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঢাকাসহ দেশের সকল মহানগরীতে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দেশের সকল জেলা সদরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঢাকায় উক্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ড.মামুন আহমেদ, হাবিব উন নবী খান সোহেল ও ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
More Stories
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে...
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল হাস্যাজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে...
শেখ হাসিনাকে ফেরানোর নির্দেশনা নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে দুই দেশের বৈঠকে আলোচনার সুযোগ...
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...