যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানিয়ে ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়েছে ইরান। দেশটি বিচার বিভাগের মুখপাত্র গোলাম হোসেইন ইসমাইলি মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। এদিকে জর্জিয়ার নির্বাচনী কর্মকর্তাকে ফল পাল্টে দেওয়ার কথা বলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এফবিআইকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির দু’জন আইনপ্রণেতা। খবর এএফপি ও আলজাজিরার।
ইসমাইলি সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি হত্যায় ভূমিকা রাখার দায়ে ট্রাম্পসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। যারা এ জঘন্য অপরাধের আদেশ দিয়েছে এবং সোলাইমানিকে হত্যা করেছে, তাদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি ইরান অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
বাগদাদে ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চলিয়ে ইরানের রেভলিউশনারি ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে। ট্রাম্পের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অ্যাগনেস ক্যালমার্ড এ হত্যাকাণ্ডকে বিচারবহির্ভূত ও আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী বলে অভিহিত করেছিলেন। ট্রাম্প ও পেন্টাগনের ৪৭ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলকে এটি ইরানের দ্বিতীয় চিঠি। এর আগে ২৬ জুন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইরান। একই সঙ্গে ট্রাম্পকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলের সাহায্যও চায়। তবে ফ্রান্সভিত্তিক ইন্টারপোল ইরানের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে জানায়, সাংবিধানিকভাবে কোনো দেশের রাজনৈতিক, সামরিক, ধর্মীয় বা বর্ণগত কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপে বিধিনিষেধ রয়েছে। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি প্রত্যাহার করার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এদিকে জর্জিয়ার নির্বাচনী কর্মকর্তাকে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার কথা বলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন। ইতোমধ্যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এফবিআইকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির দু’জন আইনপ্রণেতা।
কংগ্রেসের দু’জন ডেমোক্র্যাট সদস্য টেড লিউ ও ক্যাথলিন রাইস গত সোমবার এফবিআই পরিচালক ক্রিস ওরেই বরাবর চিঠি দিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু করার আহ্বান জানান। দেশটির ইতিহাসে এমন বিচারের কোনো নজির নেই। প্রেসিডেন্ট ফেডারেল অপরাধ থেকে নিজেকে ক্ষমা করার ব্যবস্থা নিতে পারেন। যদিও কোনো অঙ্গরাজ্য আইনে তার অপরাধের দায় থেকে মুক্তি নেওয়ার সুযোগ প্রেসিডেন্টের নেই।
জর্জিয়ায় দুই সিনেট পদের নির্বাচন মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরই মধ্যে দুই আসনে ৩০ লাখ আগাম ভোট পড়েছে। দেশটির ইতিহাসে যা প্রথম। নির্বাচনের আগে গত সোমবার কংগ্রেসে ক্ষমতার ভারসাম্য নির্ধারণের জন্য জনসমর্থন আদায়ে জর্জিয়ায় সমাবেশ করেছেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। জর্জিয়ায় সিনেট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দল থেকে রাফেল ওয়ার্নক ও জোন অসফের বিরুদ্ধে লড়ছেন রিপাবলিকান সিনেটর কেলি লোফলার ও ডেভিড পেরডু। কংগ্রেসের উভয় কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ পেতে দুই ডেমোক্র্যাটেরই জয় চান বাইডেন। ট্রাম্পের ইচ্ছা, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান দলের প্রার্থীরা জয়ী হয়ে যেন বাইডেনের কর্মসূচিগুলো আটকাতে পারেন।
আইনি লড়াইয়ে চূড়ান্ত ব্যর্থতা সত্ত্বেও ট্রাম্প ও তার কয়েকজন সমর্থক এখনও নির্বাচনের ফল বাতিলের চেষ্টা করছেন। জর্জিয়ায় সমাবেশের বেশিরভাগ সময়ই তিনি রাজ্যটির রিপাবলিকান সমর্থকপুষ্ট ডাল্টন এলাকায় ছিলেন। এ থেকে তিনি ক্ষমতায় থাকার লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
More Stories
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প–মামদানি বৈঠকে প্রশংসা আর সৌহার্দ্যের বার্তা
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। দুই...
যুক্তরাষ্ট্রের ‘এইচ-১বি ভিসা’ পুরোপুরি বাতিলের উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসনের
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি দক্ষ কর্মী আনার সবচেয়ে বড় ভিসা কর্মসূচি এইচ-১বি পুরোপুরি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভিসা ফি শতগুণ বাড়ানোর...
আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিবিসিকে চিঠি পাঠালেন ট্রাম্প
ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার (১০ নভেম্বর) বিবিসির...
৮০ হাজার অ-অভিবাসী ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮০ হাজার অ-অভিবাসী ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো...
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: মামদানির হাতে ব্যালট-খামে বাংলায় লেখা
নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার আজ মঙ্গলবার নগরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনের লক্ষ্যে...
অন্য দেশের ‘সরকার বদলের’ মার্কিন নীতি শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড
কোনো দেশের সরকার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র যে নীতি মেনে আসছিল, তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা...
