Read Time:5 Minute, 37 Second

কাজী মশহুরুল হুদা। মাইম আইকন। বাংলাদেশের খ্যাতিমান মূকাভিনয় শিল্পী। আজ তার জন্মদিন। প্রবাস বাংলার পক্ষ থেকে এই মূকাভিনয় শিল্পীর জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

কাজী মশহুরুল হুদা স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশের মূকাভিনয় জগতের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম একজন পাওনীয়র। তিনি একজন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং মাইম এ্যম্বাসেডর অব বাংলাদেশ নামে সুপরিচিতি।

প্রায় চার দশক ধরে মশহুরুল হুদা মূকাভিনয় চর্চার মাধ্যমে শুধু পারফরমার হিসাবে নয়, গবেষক হিসাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে মূকাভিনযে উদ্ভাবন ও ডেভলপমেন্ট করেছেন। মাইম আইকন শুধু মূকাভিনয় জগতেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইয়োগা টেকনিক ডেভলপার, হলিউডে হুদাইয়োগা নামে নিজেস্ব ইয়োগা স্টাইল প্রতিষ্ঠা করেছেন।

১৯৫৬ সালে ১৩ ডিসেম্বর যশোরের ঝিকরগাছায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। পিতা মরহুম ডা : নুরুল হুদা ও মাতা মাজেদা খাতুন। ঝিকরগাছার কপতাক্ষ নদের টায়রা বেড়ে ওঠে তার শৈশব জীবন। ঝিকারগাছা হাইস্কুল থেকে এস এস সি এবং ঝিকারগাছা কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করেন।

ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান থেকে বি এস সি (অনার্স) এবং এম এস সি করেন। ছোটবেলা থেকেই কাজী মশহুরুল হুদা, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। শুধু তাই নয়, আবিস্কার ও উদ্ভাবনের প্রচেষ্টায় তার উদ্ভাবিত সয়েল পেইন্ট প্রথম বাংলাদেশ সাইন্স ফেয়ারে সাইন্স মিউজিয়াম কর্তৃক প্রথম পুরস্কার পেয়েছিল।

বাংলাদেশের থিয়েটার কর্মী হুদা ১৯৭৫ সনে আমেরিকান মুকাভিনেতা এডাম দারিউসের মূকাভিনয় তাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয় ও অনুপ্রানিত করে এবং সম্পূর্ণ নিজেস্ব প্রচেষ্টায় মূকাভিনয় জগতে প্রবেশ করেন এবং বাংলাদেশে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে দেশে মূকাভিনয়কে সুপরিচিত করে তোলেন।

টিভি ও মঞ্চের পারফর্মেন্সের মাধ্যমে তিনি নিজেকে দর্শকদের কাছে নিয়ে যান খুবই অল্প সময়ে।

বাংলাদেশের প্রথম ড্রামা স্কুল (নাট্যচক্র ড্রামা স্কুল) থেকে প্রথম ড্রামা সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ছিলেন তিনি। ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে প্রথম ড্রামা ওয়ার্কশপ করেন। অতি অল্পসময়ে জনাব হুদা বাংলাদেশের মূকাভিনয় জগতে প্রচার ও প্রসার লাভ করেন। ১৯৮৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সহায়তায় স্কলারশিপ নিয়ে মূকাভিনয়ের উপর উচ্চতর প্রশিক্ষনের জন্য আমেরিকায় যান। বর্তমানে তিনি আমেরিকার লস এঞ্জেলেসে অবস্থান করছেন।

১৯৮৬ সালে ভ্যানকুভারের ওয়াল্ড এক্সপোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাইম এন্ড মুভমেন্ট ফেস্টিভলে মূকাভিনয় প্রদর্শন করেন এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করার মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল ব্যক্তিতে পরিনত হন।

হুদা লস এঙ্গেলেসে ১৯৮৫ সনে নিউ এজ মাইম থিয়েটার গঠনের মাধ্যমে নতুন ধারায় মূকাভিনয় চর্চা শুরু করেন এবং নতুন যুগের মূকাভিনয় সৃষ্টিতে নিজেকে নিয়জিত করেন। পাশাপাশি অনুন্নত দেশের মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্ট্রিট মাইমের সাথে ইমপ্রভায়জেশনের সংযোজন ঘটিয়ে গ্রামীন মূকাভিনয় নির্মান করেন।

উল্লেখ্য, ‘মূকাভিনয় আমার মনের ভাষা, মনের ভাষার স্বাধীনতা চাই। মুক্ত চিন্তার অধিকার চাই, সকল মনের মুক্তি চাই’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ হুদা মাইম ক্লাব আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ মূকাভিনয় প্রতিযোগিতা ২০১৪। ওই বছর ১৯ মার্চ বুধবার দুপুর ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নাট মন্ডলে’ এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানে মাইম আইকন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়াও দেশে বিদেশে অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছেন এই গুনি শিল্পী।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post কুয়েতে করোনায় বাংলাদেশির মৃত্যু
Next post বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের প্রকাশনা উৎসব ও কৃতিশিল্পী সম্মাননা অনুষ্ঠান
Close