বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভাস্কর্য ইস্যুতে হুকুমের আসামি করে করা মামলার আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার মামলা গ্রহণ করার মতো কোনো উপাদান না থাকায় এ আদেশ প্রদান করেন।
এর আগে গত বুধবার বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিক এ মামলার আবেদন দায়ের করেন, যার ওপর বৃহস্পতিবার আদেশ দিলেন আদালত। মামলায় হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এবং ইসলামী শাসনতন্ত্রের সৈয়দ ফয়জুল করিমও আসামির তালিকায় ছিলেন।
মামলাটি বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০০/৫০৬/৪২৭/১০৯ ধারায় করা হয়েছে। মামলায় আসামি খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও ফখরুল ইসলামদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এবং হুকুমে আসামি বাবুনগরী, মামুনুল হক এবং ফয়জুল করিম ভাস্কর্য নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন মর্মে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেফাজত ইসলামের একটি আলোচনা সভায় হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো ধরনের ভাস্কর্য থাকবে না এবং জাতির পিতার ভাস্কর্য করতে দেওয়া হবে না।’ গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম হাটহাজারীতে হেফাজত ইসলামের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘মদিনার সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোনো প্রকার ভাস্কর্য থাকতে পারবে না।’ ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না করলে আরও একটি শাপলা চত্বর ঘটাবেন বলে সরকারকে হুমকি দেন তিনি।
এ ছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে ফয়জুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি কোনো ভাস্কর্য তৈরি করা হয়, তাহলে সব ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আবারও শাপলা চত্বরে জমায়েত করা হবে।’ তখন আরও বলা হয়, ‘এর আগেও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সকাল ৬টার মধ্যে শেখ হাসিনার পতন ঘটাবেন। তোমরা সেভাবে কাজ চালিয়ে যাও।’ তারপর বাবুনগরীর হুকুমে হেফাজত ইসলামের জঙ্গিবাদীরা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অগ্নিসংযোগ করে পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়িয়ে ফেলেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতার পর থেকেই এই উগ্রপন্থী স্বাধীনতাবিরোধীরা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয়পতিপন্ন করছে। এর জন্য আওয়ামী লীগের নেতানেত্রীরাও দায়ী। কারণ তাদের মধ্যে একটি ভুল সিদ্ধান্ত কাজ করছে। তাদের ভীতিপূর্ণতার কারণে এই জঙ্গিবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছেন। কারণ এই জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে কখনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ৭ ডিসেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা মামুনুল হক এবং সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়।
More Stories
উগ্রবাদীদের সাথে সরকারের একটি অংশ মিলে হিন্দুদের উচ্ছেদে চেষ্টা চালাচ্ছে: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী অভিযোগ করেছেন, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরে যেখানেই আন্দোলন হয়েছে, সেখানেই...
আ.লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: নুর
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে...
গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না। বিশ্বের কোথাও গুমের সঙ্গে জড়িতরা...
আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করলেন জামায়াত আমির
সমান মর্যাদা এবং সম্মানের ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামী ভারতসহ সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমির...
শাহজাহান ওমরের হুংকার, ‘আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হব’
গ্রেপ্তারের পর ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর হুংকার দিয়ে বলেছেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এসব মামলা আমার...
মুহাম্মদ ইউনূসকে যেতে দেবেন না, ধরে রাখুন : শফিক রেহমান
অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, “তাকে...