প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যেই ১১ মিলিয়ন (এক কোটি ১০ লাখ) অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব প্রদানের বিল পাশে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অঙ্গিকার করলেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
২৫ নভেম্বরর এনবিসি টিভিতে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, শুধু তাই নয়, শিশুকালে মা-বাবার হাত ধরে বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর যারা বৈধ হতে পারেনি, অথচ এই দেশের আলো-বাতাসে বড় হয়েছেন, শিক্ষা লাভ করেছেন, তেমন ৮ লক্ষাধিক তরুণ-অভিবাসীর জন্যে ওবামা প্রশাসন যে কর্মসূচি (ড্যাকা) শুরু করেছিলেন, সেটি অব্যাহত রাখা হবে অর্থাৎ যাদের বয়স ৩০ বছরের নীচে তারাও পাবেন গ্রীণকার্ড।
ড্যাকা প্রোগ্রামটি বাতিলের নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশ স্থগিত করেছে।
আরো উল্লেখ্য, অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের ইস্যুতে এর আগেও প্রেসিডেন্ট ওবামা একই অঙ্গিকার করে ইউএস সিনেটে কমপিহেনসিভ বিল উত্থাপন করেছিলেন তার ডেমক্র্যাটিক পার্টির মাধ্যমে। রিপাবলিকানদের চরম অসহযোগিতার পরিপ্রেক্ষিতে তা পাশ হতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের জন্যে সর্বশেষ একটি এ্যামনেস্টির ঘটনা ঘটেছিল ১৯৮৭ সালে প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের আমলে। এরপর কেটে গেছে ৩২ বছর। এভাবেই বেড়েছে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা।
স্মরণ করা যেতে পারে, ২০০৮ সালে বিদায়ের প্রাক্কালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ আরেকটি আদেশ দিয়েছিলেন, যার মাধ্যমে ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর যারা অবৈধ অভিবাসীতে পরিণত হন, তাদেরকে নানা প্রক্রিয়ায় গ্রীণকার্ড ইস্যু করা হয়েছে। তবে যারা বেআইনীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন তারা কোন সুযোগই পাননি। জো বাইডেনের অঙ্গিকার অনুযায়ী হয়তো তেমন সোয়া কোটির মধ্যে এক কোটি ১০ লাখের ভাগ্য প্রসন্ন হবে। তবে এজন্যে দরকার হবে প্রতিনিধি পরিষদের মত ইউএস সিনেটেও ডেমক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
৩ নভেম্বরের নির্বাচন অনুযায়ী সিনেটে ডেমক্র্যাটরা ৪৮ আসন ধরে রেখেছে। রিপাবলিকানদের ৫০টি। জর্জিয়ায় দুই আসনের ‘রানঅফ’ নির্বাচন হবে ৫ জানুয়ারি। দুটিই ছিল রিপাবলিকানদের। সেগুলো ডেমক্র্যাটরা দখলে সক্ষম হলেই বাইডেন তথা ডেমক্র্যাটদের অভিবাসন ইস্যুতে কিছু করার পথ সুগম হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অর্থাৎ উভয় দল সমান আসন পেলে ডেমক্র্যাটরা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভোট পাবেন। তারা ৫১ ভোটের মালিক হতে পারলে অভিবাসন-বিলটি পাশে আর কোন সমস্যা হবে না। কারণ, হাউজে এখনও ডেমক্র্যাটরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। দুই দশকেরও অধিক সময় যাবত অবৈধভাবে বসবাসরতদের মধ্যে লক্ষাধিক বাংলাদেশীও রয়েছেন। বাইডেনের সর্বশেষ এ অঙ্গিকারে করোনায় জর্জরিত কমিউনিটিতেও কিছুটা স্বস্তির বাতাস বইতে শুরু করেছে।
More Stories
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে কাজ করবে ভারতীয় আমেরিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালাবে ভারতীয় আমেরিকানরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে...
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। শুক্রবার...
হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ট্রাম্প ২১০, কমলা ১১৩
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কে জয় পেতে যাচ্ছেন, এমন পূর্বাভাসও আসছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে। অ্যাসোসিয়েটেড...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস
ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর ধীরে ধীরে ফলাফল আসতে শুরু করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো...
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের
রাশিয়াসহ ‘প্রতিপক্ষ’ দেশগুলো বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের দাবি, তারা নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা...