বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, আবারও নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারির কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে ইউরোপ। আগামী ছয় মাস মহাদেশটির সামনে ‘কঠিন’ সময় অপেক্ষা করছে বলে এর মধ্যেই সতর্ক বার্তা দিয়েছে সংস্থাটি। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ডব্লিউএইচওর ইউরোপপ্রধান হ্যানস ক্লুগ জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে মহাদেশটিতে ২৯ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় প্রাণ হারিয়েছে।
ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে এক সংবাদ সম্মেলনে হ্যানস ক্লুগ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপ আবারও (করোনাজনিত) বৈশ্বিক মহামারির কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে।
‘করোনায় প্রতি ১৭ সেকেন্ডে একজন মারা যাচ্ছে’, বলেও জানান হ্যানস ক্লুগ।
করোনা মোকাবিলায় এরই মধ্যে একাধিক সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। কিন্তু, তবুও ইউরোপকে আসন্ন দিনগুলোতে কঠিন সময় পার হরতে হবে বলে মনে করেন হ্যানস ক্লুগ। তিনি বলেন, ‘টানেলের শেষে আলোর রেখা দেখা গেলেও (সামনে) কঠিন ছয়টি মাস অপেক্ষা করছে।’
তবে হ্যানস ক্লুগ এও জানান, লকডাউন দেওয়ার কারণে ইউরোপে করোনার নতুন সংক্রমণের সংখ্যা কমেছে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রতিষেধক প্রস্তুত করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের একাধিক সংস্থা। কোনো সংস্থা এককভাবে, আবার যৌথ উদ্যোগেও তৈরি করা হচ্ছে করোনার টিকা। এসব ভ্যাকসিনের কাজ হবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে করোনার বিরুদ্ধে লড়তে শেখানো। এরই মধ্যে একাধিক ভ্যাকসিন তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রাথমিক ফল প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, করোনা প্রতিরোধে এসব ভ্যাকসিন বেশ কার্যকর। এর ফলে করোনার মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারার আশা জোরদার হয়েছে।
অক্সফোর্ড, ফাইজার-বায়োএনটেক, স্পুটনিক ও মডার্নার প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সংস্থাগুলোর চারটি ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে ভালো কাজ করছে।
এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে গতকাল বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ দুটি করোনার ভ্যাকসিনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিতে পারে ইউরোপ।
গত মাস (অক্টোবর) থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার আশঙ্কা জোরদার হতে শুরু করলে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় পুনরায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমেরিকা মহাদেশ। এর পরই রয়েছে ইউরোপ। এখন পর্যন্ত ইউরোপে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে এক কোটি ৫৭ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৯ জন এবং করোনায় মারা গেছে সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি ও জার্মানিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে করোনায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আর, ইউরোপে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ফ্রান্সে— ২১ লাখ ১৫ হাজার ৭১৭ জন।
More Stories
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সৌদির
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের যে কোনো প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেন তারা। শুক্রবার...
বাংলাদেশে ব্যবসার অনুমোদন পেলো স্টারলিংক
স্টারলিংক টেলিকমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রেশন প্রদান করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে (নন-জিওস্টেশনারি অরবিট) লাইসেন্স পেলেই বাংলাদেশে...
ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ধর্মঘটের ডাক
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিনের ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস নামের একটি গোষ্ঠী। সোমবার...
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ১৬০০
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৪ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৪০৮ জন। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন...
চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে ঈদ রোববার
সৌদি আরবের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে দেশটিতে কাল রোববার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত...
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্প, ১৪৪ জনের মৃত্যু
মিয়ানমারে শক্তিশালী জোড়া ভূমিকম্পের আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৩০ জন। শুক্রবার (২৮ মার্চ)...