ঢাকার প্রভাবশালী সাংসদ হাজি মো. সেলিম। পুরান ঢাকায় তার একক আধিপত্য। তিনি বড় মাপের একজন ব্যবসায়ীও। কিন্তু একদিনের ব্যবধানে সবকিছু ওলোটপালট হয়ে গেছে এই রাজনীতিকের। কারণ যেই পরিবারকে নিয়ে সবাই তটস্থ থাকত তাদেরই চকবাজারের দেবীদাস ঘাট লেনের ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ি’তে হঠাৎ অভিযান চালায় র্যাব। বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অবৈধ অস্ত্র, বিদেশি মদ, ইয়াবা।
এর বাইরে বিপুল পরিমাণ ওয়াকিটকি উদ্ধার করেছে এলটি ফোর্স র্যাব। অবৈধভাবে এসব ব্যবহার করতেন হাজী সেলিমের ছেলে ও ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান মোহাম্মদ সেলিম।
নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় যাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও মাদক ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার অভিযোগে ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার দিনভর ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ি’ ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় অভিযান চালিয়ে এসব ওয়্যারলেস সিস্টেম সরঞ্জাম ও ৩৮টি কালো ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। যা সরকারি কর্মকর্তারা ছাড়া ব্যবহারের অনুমতি নেই।
র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাজী সেলিমের ছেলে পুরান ঢাকা তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য সম্পূর্ণ ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মধ্যে রেখেছেন। এজন্য তিনি অবৈধভাবে ভিপিএস ডিভাইস ব্যবহার করতেন। এই ডিভাইস আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ট্র্যাক করতে পারেন না। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই তিনি এই ভিপিএস নেটওয়ার্কিং সিস্টেম করেছিলেন।
এসব ডিভাইসের মাধ্যমে তিনি ঘরে বসেই পুরো পুরান ঢাকার তথ্য সংগ্রহ করতে পারতেন বলেও জানা গেছে।
অভিযানে একটি রুমে ৩টি রেডিও স্টেশন বা বেইজ স্টেশনের সন্ধান পাওয়া গেছে। পাশাপাশি একটি অত্যাধুনিক ড্রোন ও বিভিন্ন প্রযুক্তি সামগ্রী উদ্ধার করেছে।
অভিযানে থাকা র্যাব সদস্যরা জানান, রুমে বসে এই ওয়াকিটকি দিয়ে যোগাযোগ করার জন্য রেডিও স্টেশন বা বেইজ সেন্টার স্থাপন করা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পাশাপাশি নিজের বেড রুমে বসে ওয়াকিটকি ব্যবহার করা করতেন এই সাংসদপুত্র। এমন কি তার রুমের আলমারিতে বিয়ার আর মদের পাশাপাশি বিছানার নিচে সার্বক্ষণিক একটি বিদেশি অস্ত্র রাখতেন তিনি।
আটকের পর প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান সেলিম র্যাবকে জানিয়েছে, তিনি এই ওয়াকিটকি দিয়ে তার ব্যবসার কাজ পরিচালনা করতেন।
যদিও র্যাবের মুখপাত্র লে. কর্ণেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছেন, জানা গেছে এই রুমে বসে ওয়াকিটকিগুলো চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যালপের জন্য ব্যবহার করা হত।
অভিযানে পাশের একটি ফ্ল্যাটে টর্চার সেলেরও সন্ধান পায় র্যাব। ইরফান সেলিমের তার রুমে পাওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত একটি হ্যান্ডকাফ ও বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত একটি ব্রিফকেস উদ্ধার করা হয়। র্যাব কর্মকর্তাদের ধারণা, সাধারণ মানুষদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তুলে আনা হতো।
More Stories
এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় ৬১ শতাংশ মানুষ
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অগাস্টের ৮ তারিখ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তী...
নির্বাচনে যত দেরি হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে : তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে। সাবেক স্বৈরাচার দেশি-বিদেশি প্রভুদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র...
অন্তর্বর্তী সরকার ফেল করলে আমাদের বিপদ আছে : এ্যানি
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করাই...
উগ্রবাদীদের সাথে সরকারের একটি অংশ মিলে হিন্দুদের উচ্ছেদে চেষ্টা চালাচ্ছে: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী অভিযোগ করেছেন, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরে যেখানেই আন্দোলন হয়েছে, সেখানেই...
আ.লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: নুর
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে...
গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত কেউ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না। বিশ্বের কোথাও গুমের সঙ্গে জড়িতরা...