Read Time:3 Minute, 58 Second

৩ দিনের ব্যবধানে নিউইয়র্কে দুই বাংলাদেশী জাতিগত-ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক (হেইট ক্রাইম) হামলার শিকার হলেন। উভয়েই প্রাণে বেঁচে গেলেও আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর একজন হলেন ব্রুকলীনের পুটনামে বসবাসরত ফেনীর দাগনভূইয়ার সন্তান মনির আহমেদ (৩৪) এবং অপরজন কুইন্সের আক্তারুজ্জামান (৪৫)।

উভয় ঘটনায় পুলিশে রিপোর্ট হলেও ৩০ সেপ্টেম্বর রাত পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে নিউইয়র্ক পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, দুর্বৃত্তকে শনাক্ত এবং গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আহত মনিরের স্বজনেরা জানান, গত শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বাসার সন্নিকটে নস্ট্র্যান্ড এভিনিউ এবং হ্যানকক স্ট্রিটে বাংলাদেশী মালিকানাধীন আল্ বারাকা গ্রোসারি থেকে খাদ্য-সামগ্রী ক্রয়ের পর ফেরার সময় দুই কৃষ্ণাঙ্গ দুর্বৃত্ত কাছে এসে মনিরকে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করে। নিজের দেশে ফিরে যাবার আদেশ করে। অন্যথায় হত্যার কথা বলেই তার ওপর চড়াও হয়। প্রথমেই তার হাতে ছুরিকাঘাত করে। এরপর নাক ও মুখে কিল-ঘুষিতে রক্তাক্ত করে। আর্ত-চিৎকারের সময়েই দুর্বৃত্তরা মনিরের হাতে থাকা সেলফোন এবং পকেট থেকে ৪৮০ ডলারসহ ওয়ালেট কেড়ে নিয়ে গা ঢাকা দেয়। এরপর ৯১১ এ ফোন করলে এ্যাম্বুলেন্সসহ পুলিশ আসে। মনিরকে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশের গাড়িতে উঠিয়ে আশপাশের অলি-গলিতে সন্ধান করে দুর্বৃত্তকে ধরার জন্য। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। এরপরই মনিরকে চিকিৎসার জন্যে নিকটস্থ কিংস কাউন্টি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হয়।
নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে মনির জীবিকা চালাচ্ছেন। নিজ এলাকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বর্বরোচিত নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্যে বিভিন্ন দেশ ঘুরে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে সক্ষম হলেও বর্ণবিদ্বেষী দুর্বৃত্তের ভিকটিম হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন মনির।

অপরদিকে, ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে একইভাবে কুইন্সের ফ্লাশিংয়ে হেইট ক্রাইমের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশী আক্তারুজ্জামান। দুর্বৃত্তরা তার বাসায় চড়াও হয়েছিল। এ ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তাকেও জাতিগত ও ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক গালাগালি করার পর মারধর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

করোনায় বিপর্যস্ত কমিউনিটির প্রায় সকলেই চলমান ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশের মধ্যেই এমন আক্রমণের ঘটনায় এক ধরনের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেকে। সকলকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে, নির্জন স্থানে একাকি না চলতে। দিন ও রাত উভয় সময়েই যেন একাকি পথ চলতে সবাই সতর্ক থাকেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বসনিয়ার জঙ্গলে বাংলাদেশিসহ কয়েকশ মানুষ
Next post ভারতের জেলে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বন্দি বাংলাদেশের
Close