সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ড দেয়া পাঁচ ব্যক্তির সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরবের একটি আদালত। ২০১৮ সালের ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডসহ মোট আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেয়া হয়েছিল।
সোমবার সৌদি আরবের সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, রিয়াদের আদালত মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ ব্যক্তিকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। বাকি তিনজনকে ১০ বছর করে সাজা দেয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে এই সাজাই চূড়ান্ত। এর মাধ্যমে সৌদি আরবে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম শেষ হলো।
তবে কৌঁসুলিরা বলছেন, সাংবাদিক খাসোগির পরিবার তাদের ক্ষমা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তবে জামাল খাসোগির বান্ধবী এই সাজাকে ‘বিচারের নামে তামাশা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
গত মে মাসে জামাল খাসোগির ছেলে সালাহ মোহাম্মদ ঘোষণা করেন যে, তার পিতাকে যারা হত্যা করেছেন তাদেরকে তিনি এবং তার ভাই ক্ষমা করে দিয়েছেন। তারা মেনে নিয়েছেন যে, ওই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল না।
এই ঘটনায় গত জানুয়ারিতে রিয়াদের এক ফৌজদারি আদালতে ১১ ব্যক্তির বিচার শুরু হয়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এদের মধ্যে হত্যা করা এবং হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়ার অভিযোগে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় সৌদি আরবের একটি আদালত। ‘হত্যার তথ্য গোপন এবং আইন ভঙ্গের অভিযোগে’ অন্যদের ২৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সৌদি সরকারের একজন সমালোচক জামাল খাসোগিকে ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তানবুলের কনস্যুলেটে হত্যা করে একদল সৌদি এজেন্ট। কিন্তু সৌদি সরকার বলেছে, একটি ‘বেপরোয়া অভিযানে’ ওই সাংবাদিক খুন হন। পরের বছর ১১ ব্যক্তিকে বিচারের জন্য অভিযুক্ত করে সৌদি কৌঁসুলিরা, যদিও তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সেই বিচার প্রক্রিয়াকে সেই সময় ‘ন্যায়বিচার বিরোধী’ বর্ণনা করে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোটিয়ার অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। তিনি বলেছিলেন, খাসোগিকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সুপরিকল্পিত খুন’, যার জন্য সৌদি আরব রাষ্ট্র দায়ী।
মিজ ক্যালামার্ড বলেছিলেন, ওই হত্যাকাণ্ডে সৌদি সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দায়ী, যাদের মধ্যে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও রয়েছেন। তবে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ নাকচ করেছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। তবে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে খাসোগি হত্যার অভিযোগে যুবরাজের সাবেক দুই সহকারীকে অভিযুক্ত করেছে তুরস্ক। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তুরস্কে আরও ১৮ জনের বিচার চলছে।
৫৯ বছর বয়সী সাংবাদিক জামাল খাসোগি ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। তাকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর সর্বশেষ তুরস্কের ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকতে দেয়া যায়। তিনি সেখানে গিয়েছিলেন তার তুর্কী বান্ধবীকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে। সেখানে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় খাসোগীকে।
More Stories
পেন্টাগন থেকে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথি ফাঁস
ইসরায়েলে ১ অক্টোবর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথির সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও...
হামাসপ্রধান সিনওয়ার নিহতের গুঞ্জন, খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে...
বাংলাদেশিসহ সব শান্তিরক্ষীকে সরিয়ে নিতে বললেন নেতানিয়াহু
লেবাননে শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্বরত সব সেনাকে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রোববার...
ইয়েমেনে সম্মিলিত বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
ইয়েমেনের হোদেইদাহ বিমানবন্দর, সানা এবং ধামার সিটিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত টেলিভিশন চ্যালেন...
মুসলিমদের শত্রু এক: খামেনি
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, আমরা যদি এক হতে পারি...
ইসরাইলকে আরও কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল যদি ‘সর্বনিম্ন ভুল’ করে তাহলে তেহরান নিশ্চিতভাবে আরও ‘শক্তিশালী এবং কঠোর প্রতিক্রিয়া’...