নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা বাতিল করে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০’ এর খসড়া তৈরির খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি দাবি করে, ইসি তার ওপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে নিজেদের অযোগ্য মনে করলে প্রধান কমিশনারসহ সব কমিশনাররা স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে জাতি উপকৃত হবে।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানায় টিআইবি।
এতে বলা হয়, প্রার্থিতা বাতিলের সরাসরি একক ক্ষমতা থেকে সরে আসা নির্বাচন কমিশনের একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১-ই ধারার ১ ও ২ উপধারা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, তা তদন্ত করে দেখার দায়িত্ব ইসির। তদন্তে তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার সরাসরি ক্ষমতা রয়েছে সংস্থার হাতে। এর পক্ষে ইসি যে ব্যাখ্যাই দিক সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। এ পদক্ষেপ ইসিকে অকার্যকর করে দেয়ার হীন চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি বলেন, জনগণের কাছে কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা কোন অবস্থায় আছে সেটা অনুধাবন করাটা এখন তাদের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব।
ড. ইফতেখারুজ্জামান নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ইতিপূর্বে কমিশনের অধীনে যেসব জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, সেখানে ভোটারের উপস্থিতি, পরিবেশ, সর্বোপরি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, এই আইনের মাধ্যমে তার গুণগত পরিবর্তন আসবে কি? যদি না-ই ঘটে, তাহলে এ জাতীয় নতুন আইনের যৌক্তিকতা কোথায়?
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত ‘নির্বাচন কমিশন’ নামটিকে আর কলঙ্কিত না করা। ইতিমধ্যে জনসাধারণের মধ্যে তাদের প্রতি যে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা উপলব্ধি করে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানো।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিদ্যমান আইনে তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ সাপেক্ষে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিধান থেকে সরে এসে স্বতন্ত্র আইনের খসড়ায় দুইটি শর্ত পূরণের বাধ্যবাধকতাসহ বেশকিছু পরোক্ষ শর্তপূরণের যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তার যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ এবং পক্ষপাতদুষ্ট। সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন বাস্তবে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার নয় বরং বিশেষ কোনো দলীয় রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে নিজেকে ব্যবহৃত হতে তৎপর রয়েছে, যা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই কমিশনের জন্য অভূতপূর্ব মাত্রায় বিব্রতকর।
তারা জানায়, যদি আলাদাভাবে ‘রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন’ করতেই হয় তবে তা সংশ্লিষ্ট খাতে বিশেষজ্ঞসহ সব অংশিজনের মতামতের পর্যাপ্ত গুরুত্ব প্রদান সাপেক্ষে করা অপরিহার্য বলে মনে করছে টিআইবি।
More Stories
সরিয়ে দেওয়া হলো আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল হাসান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসানকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।...
ট্রাইব্যুনালে জিয়া বললেন ‘আমি আয়নাঘরে চাকরি করিনি’
এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। আজ বুধবার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন তিনি।...
অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন: রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রাখা হয়নি
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’এর খসড়ায় সংগঠন বা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশের যে বিধান প্রস্তাব করা...
পার্লামেন্ট ছাড়া কারও সংবিধান সংশোধনের অধিকার নেই: হাসান আরিফ
কোনো সরকারের অধিকার নেই সংবিধান সংশোধন করার। এটা একমাত্র পার্লামেন্ট করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ...
ভারতের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কের দিকে এগোচ্ছি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) পরবর্তী রাউন্ডে যোগ দিতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি...
আগামী মার্চ-এপ্রিলেই নির্বাচন দিতে হবে : এ্যানি
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, সংস্কারের জন্য তিন মাসের বেশি সময় দরকার হওয়ার কথা নয়। জনগণ দ্রুত...