আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহর মৃত্যুতে সংসদে আনা শোকপ্রস্তাবে আলোচনা করতে গিয়ে কেঁদেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজনৈতিক জীবনে চলার পথ সহজ ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বারবার বাধা (পেয়েছি), কিন্তু যে কজন মানুষ সব সময় খুব পাশে থেকেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে সমর্থন দিয়েছেন তাদের দুজন মানুষকে এক সঙ্গে হারালাম এটা সবচেয়ে কষ্টের।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস উইংয়ের উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার ফেসবুকে এক পোস্টে এসব উল্লেখ করেন।
হাসান জাহিদ পোস্টে লেখেন দুই দিন বিরতির রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদের মুলতবি অধিবেশন শুরু হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে চলতি সংসদের সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংসদীয় রেওয়াজ অনুযায়ী, অধিবেশনের শুরুতে সম্পূরক কার্যসূচী শোকপ্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন স্পিকার। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। এ সময় ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ’র জীবন বৃত্তান্তসহ শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এরপর মোহাম্মদ নাসিমের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিমের পিতা জাতীয় চার নেতা এম মনসুর আলীর কথা স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন দেশে ফিরি মোহাম্মদ নাসিম একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। আমি যখন দেশে ফিরে আসি তখন একটা প্রচেষ্টা ছিল এ শহীদ পরিবারগুলোর ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে নিয়ে আসা। আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং শক্তিশালী করা। এ কাজ করতে গিয়ে নাসিম ভাইকে সব সময় আমার পাশে পেয়েছি।’
এ সময় বিভিন্ন শাসনামলে মোহাম্মদ নাসিমের ওপরে নির্যাতনের বর্ণনা করতে গিয়ে বারবার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুব দুঃখজনক… আসলে আমার জন্য খুব কষ্টকর হচ্ছে বলতে, এভাবে সবাইকে হারানো খুবই দুঃখজনক।’
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি (দেশে ফিরে) আসার পর থেকেই আবদুল্লাহ সাহেবকে পেয়েছি, মনি (শেখ ফজলুল হক মনি) ভাইয়ের সঙ্গে তিনি ছিলেন। আমার নির্বাচন পরিচালনাই শুধু নয়, আমার নির্বাচনী এলাকার সম্পূর্ণ দেখাশোনা তাকে করতে হতো। রাজনীতিতে অনেক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছে গোপালগঞ্জবাসী। যখনই যারা ক্ষমতায় এসেছে, সেটা জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া; তাদের যেন একটা লক্ষই ছিল গোপালগঞ্জের ওপরে হাত দেওয়ার চেষ্টা। আমাদের বহু নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের ওপর অকথ্য অত্যাচার হয়েছে। সেই দুঃসময়গুলিতে সংগঠনকে ধরে রাখা, সংগঠনের নেতা কর্মীদের দিকে নজর দেওয়া, এ কাজগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে গেছেন আবদুল্লাহ সাহেব’।
শোকপ্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেন মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ডা. হাবিবে মিল্লাত, মৃণাল কান্তি দাস।
More Stories
সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাতে নিরাপদে থাকে: সালাহউদ্দিন
ওসমান হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে না বরে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।...
‘চারদিকে ছড়িয়ে থাকা লাখ লাখ হাদির মতো আমিও ভয় পাই না’
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা ও পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল...
দেশে ফিরছেন তারেক রহমান: প্রস্তুত হচ্ছে বাড়ি-কার্যালয়
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। এ উপলক্ষে তার বাসভবন ও কার্যালয়ের সংস্কার কাজ প্রায় সম্পন্ন...
হাদির পরিবারকে সান্ত্বনা প্রধান উপদেষ্টার, সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারকে সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর...
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত, লড়াই চলছে
সুদানে সন্ত্রাসীদের হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার খুদে বার্তায় এ কথা জানায়। আইএসপিআর...
‘হাদির অস্ত্রোপচারের সময় দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) অস্ত্রোপচারের সময় দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট...
