Read Time:4 Minute, 45 Second

যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হোয়াইট হাউসের বাইরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট-টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। ন্যাশনাল গার্ড, সিক্রেট সার্ভিসসহ বিপুল সংখ্যক অশ্বারোহী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরেই সেই পথ ধরে নিকটবর্তী একটি চার্চে যান ট্রাম্প। তবে নিয়ম অনুসারে সেখানে কোনও প্রার্থনা করেননি তিনি, শুধু ছবি তুলেই চলে এসেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব নিয়ে দেশটিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সোমবার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হোয়াইট হাউসের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়ার ‘মিশনে’ অংশ নিয়েছিল ন্যাশনাল গার্ড মিলিটারি পুলিশ, সিক্রেট সার্ভিস, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি পুলিশ, এমনকি কলম্বিয়া জেলা পুলিশও। তারা ট্রাম্পের জন্য চার্চে যাওয়ার রাস্তা জোরপূর্বক ফাঁকা করে দেন। এর পরপরই অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সেন্ট জন’স চার্চে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে বাইবেল হাতে ছবিও তোলেন তিনি।

এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ব্রুকলিনের রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তাদের জায়গা করে দিতে এক পাশে সরে যায় সড়কের গাড়িগুলো। সুবিচারের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের তুমুল স্লোগানের সঙ্গে হর্ন বাজিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন অনেক গাড়িচালকও। এসময় বিক্ষোভকারীদের পেছনে পুলিশের গাড়িও লক্ষ্য করা গেছে।

একই সময় অপেক্ষাকৃত ছোট মিছিল বের হয়েছে হলিউডে। সেখানে কারফিউ অমান্য করেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন তারা।

কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশ করলেও এ নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ‘গুণ্ডা’ বলে অভিহিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শিগগিরই ঘরে ফিরে না গেলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি সেনা নামানোরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

তবে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে যেখানে গোটা দেশকে এক বন্ধনে বাঁধার কথা, সেখানে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এমনকি বিক্ষোভকালে সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত চার্চটিতে যাওয়া তার নির্বাচনী প্রচারণারই কৌশল বলেও মনে করছেন অনেকে।

ওয়াশিংটন এলাকার (ডায়োসিজ) বিশপ ম্যারিয়ান এডগার বুড্ডে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডে তিনি ‘চরম ক্ষুব্ধ’।

ডায়োসিজের টুইটার হ্যান্ডেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট আমাদের অশ্বেতাঙ্গ মানুষদের যন্ত্রণা ও পবিত্র মূল্যবোধকে স্বীকার করেননি, যারা দেশের ৪০০ বছরের পদ্ধতিগত বর্ণবাদ ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের অবসান চায়।’

ট্রাম্পের সমালোচনায় সরব হয়েছেন নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোও। চার্চে গিয়ে ছবি তোলার জন্য শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর শক্তিপ্রয়োগ ‘অত্যন্ত লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, রাবার বুলেটে চোখ হারালেন সাংবাদিক
Next post জর্জ ফ্লয়েড হত্যা: আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিলেন ওবামা
Close